বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটার ও সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল শুধু মাঠের ক্রিকেট দিয়েই মানুষের ভালোবাসা জয় করেননি, মাঠের বাইরেও রেখে যাচ্ছেন মানবিকতার দৃষ্টান্ত।
এবার সেই মানবিকতার পরিচয় মিলল নাটোরের নলডাঙ্গা হালতিবিল ও বারনই নদীর পাশে পিপরুল ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রামে। অজপাড়াগাঁয়ের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্পূর্ণ নিজের খরচে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন তামিম।
গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে নামাজের জন্য ভোগান্তি পোহাচ্ছিলেন। কাছাকাছি কোনো মসজিদ না থাকায় মুসল্লিদের অনেক কষ্ট করে নামাজ আদায় করতে হতো। ঠিক তখনই তামিম ইকবাল নিজের উদ্যোগে এগিয়ে আসেন। চার বছর আগে জাতীয় দলের সতীর্থ তাইজুল ইসলামের সঙ্গে এই ইচ্ছার কথা শেয়ার করেন তিনি। তাইজুল ইসলাম তার বাবার মাধ্যমে এমন একটি গ্রামের খোঁজ করেন, যেখানে সত্যিই মসজিদের প্রয়োজন ছিল প্রবল। শেষ পর্যন্ত হাঁপানিয়া গ্রামকেই বেছে নেওয়া হয়।
শুরুতে এ জায়গায় ছিল ছনের বেড়া আর টিনের চালের মসজিদ। এলাকাবাসী অনেক চেষ্টায় পাকা মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও অর্থের অভাবে তা আলোর মুখ দেখেনি। এমনকি একবার একজনকে এক লাখ টাকা তুলে একজনকে মসজিদ নির্মাণের জন্য দিলেও ব্যক্তিটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায়। সবশেষে হাত বাড়ান তামিম ইকবাল এবং নিজ খরচে পাকা মসজিদটি সম্পূর্ণভাবে নির্মাণ করেন।
আজ সেই গ্রামে দাঁড়িয়ে গেছে দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদ। প্রতিদিন গ্রামের মানুষ এখানে নিয়মিত নামাজ আদায় করছেন নির্বিঘ্নে, কষ্ট ছাড়াই। স্থানীয় এলাকাবাসী সাহিনুর ইমলাম, পাভেল প্রামাণিক, আব্দুল হান্নান সরকার, মসজিদের মুয়াজ্জিন ইস্তুল প্রামাণিকসহ অনেকে বলেন, তামিমের এ উদ্যোগ তাদের জীবনে যেন এক নতুন আলো জ্বালিয়েছে। তিনি যে উদার মনের মানুষ, সতীর্থদের মুখেই তা শোনা যায় বারবার।
মসজিদের কমিটির সভাপতি মো. সুলতাল প্রামাণিক মিঠু বলেন, সমাজের জন্য এমন কাজেও তিনি হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণা। সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া, তামিম যেন আরও বড় বড় ভালো কাজে যুক্ত হতে পারেন। মানুষের কল্যাণে তার অবদান দিন দিন যেন বৃদ্ধি পায়।
তিনি বলেন, ক্রিকেটার তামিম ইকবাল একটি টিনের মসজিদ ভেঙে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত জামে মসজিদ গড়ে তুলেছেন। এতে তিনি মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন।
মন্তব্য করুন