শারজাহর গরম আলোয় একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—বাংলাদেশ কি পারবে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে? সিরিজ আগেই নিশ্চিত করে রাখা টাইগাররা এবারও শুরুতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। প্রথমে বল হাতে শুরুর ধাক্কা, এরপর ধারাবাহিক আক্রমণে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে আফগানদের ব্যাটিং লাইনআপ। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে আফগানিস্তানের ইনিংস থেমেছে ১৪৩ রানে। ফলে হোয়াইটওয়াশের জন্য এখন বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৪৪ রান।
টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেন অধিনায়ক জাকের আলী। সিদ্ধান্তটা একদম সঠিক প্রমাণ করেন বোলাররা। শরিফুল ইসলামের নিখুঁত লেন্থে শুরুতেই ভাঙে আফগানিস্তানের উদ্বোধনী জুটি—২০ রানের মাথায় ফেরেন ইব্রাহিম জাদরান (৭)। অন্য ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজও বেশি দূর যেতে পারেননি, নাসুম আহমেদের ঘূর্ণিতে থামেন ১২ রানে।
তিনে নেমে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন সেদিকুল্লাহ আতাল। ব্যাটে-বলে আত্মবিশ্বাসী দেখা গেলেও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি তিনি। ২৩ বলে ২৮ রানে ফিরিয়ে দেন সাইফউদ্দিন, যিনি ছিলেন আজ দুর্দান্ত ছন্দে। মিডল ওভারজুড়ে দারুণ নিয়ন্ত্রণে রাখেন রানরেট, তুলে নেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।
এরপর একে একে ওয়াফিউল্লাহ তারাখিল (১১), আজমাতউল্লাহ ওমরজাই (৩) ও অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবির (১) বিদায়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ৮২—হাতে নেই ৬ উইকেট।
অধিনায়ক রশিদ খান স্বভাবসুলভ আগ্রাসন দেখিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে সেটিও বেশিক্ষণ টেকেনি। এক চার ও এক ছক্কায় ৭ বলে ১২ রানের ছোট্ট ইনিংস শেষে তিনিও তানজিম হাসান সাকিবের শিকার হন।
শেষদিকে এক প্রান্ত ধরে রাখেন দারবিশ রাসুলি। লড়াকু ২৯ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দশ নম্বরে নেমে মুজিব উর রহমানও কার্যকর ছোট ক্যামিও খেলেন—১৮ বলে অপরাজিত ২৩। তার সৌজন্যেই ইনিংসটা ১৪৩ রানে পৌঁছায়।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (২.৩ ওভারে ১২ রানে ৩ উইকেট)। নাসুম আহমেদ নিয়েছেন ২ উইকেট, সমান সাফল্য তানজিম সাকিবেরও। শরিফুল ইসলাম ও রিশাদ হোসেন পেয়েছেন একটি করে উইকেট।
এই সিরিজে বোলাররা ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে রেখেছেন। এখন তাদের কাজটা শেষ করতে হবে ব্যাটারদের—১৪৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন পূরণে। শারজাহর উইকেট স্পিন সহায়ক হলেও এই মাপের লক্ষ্য অর্জনে নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংই হতে পারে বাংলাদেশের মূল চাবিকাঠি।
মন্তব্য করুন