

ক্রিকেটে এমন দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়। কিন্তু ভারতের টিনসুকিয়ার মাঠে শনিবার ঘটল এক অবিশ্বাস্য কীর্তি—একই ইনিংসে দুটি হ্যাটট্রিক! রঞ্জি ট্রফির দ্বিতীয় রাউন্ডে আসামের বিপক্ষে সার্ভিসেস দলের দুই বোলার, অর্জুন শর্মা ও মোহিত জাংরা, প্রত্যেকে নিলেন এক একটি হ্যাটট্রিক। ভারতের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ইতিহাসে এটাই প্রথমবার, যখন দুই আলাদা বোলার একই ইনিংসে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়লেন।
আসামের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ের সূচনা করেন বাঁহাতি স্পিনার অর্জুন শর্মা। ইনিংসের ১২তম ওভারে পরপর তিন বলে সাজঘরে ফেরান রিয়ান পরাগ (৩৬), সুমিত ঘাডিগাঁওকর এবং সিবশঙ্কর রায়কে। তিন বলে তিন উইকেট—রঞ্জি ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেয় তার নাম।
এরপর এল আরও বড় চমক। বাঁহাতি পেসার মোহিত জাংরা, যিনি নিজেও আসামের সন্তান, ইনিংসের ১৫ ও ১৭তম ওভারে ছড়িয়ে দিলেন নিজের জাদু। প্রথমে শেষ বলে বিদায় করলেন প্রদ্যুন সাইকিয়াকে (৫২), পরের ওভারে পরপর দুই বলে তুলে নিলেন মুখতার হোসেন (১) ও ভর্গব লাহকারকে (০)। এই তিন উইকেটে সম্পন্ন হলো দিনের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক—যা ইতিহাসে অনন্য।
অর্জুন শেষ পর্যন্ত নেন ৫ উইকেট (৫-৪৬), জাংরার ঝুলিতে ৩ উইকেট (৩-৫)। বাকি ২ উইকেট পান পুলকিত নারাং (২-২৭)। আসাম পুরো দল মিলে মাত্র ১৮ ওভারেরও কম সময়ে গুটিয়ে যায় ১০৩ রানে।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ইতিহাসে এমন কীর্তি এতদিনে মাত্র তিনবার দেখা গেছে। প্রথমটি ১৯০৭ সালে ইংল্যান্ডে—অস্ট্রেলিয়ার আলবার্ট ট্রট মিডলসেক্সের হয়ে দুই হ্যাটট্রিক নিয়েছিলেন। দ্বিতীয়টি ঘটে ১৯৬২ সালে রঞ্জি ট্রফিতে, সার্ভিসেসেরই জোগিন্দর সিং রাও করেছিলেন সেই কীর্তি। তবে দুই ভিন্ন বোলারের হাত ধরে একই ইনিংসে দুটি হ্যাটট্রিক—এটাই প্রথমবার।
দিনের নাটক এখানেই শেষ নয়। ১০৩ রানে আসামকে গুটিয়ে দেওয়ার পর সার্ভিসেসও ধাক্কা খায়। রিয়ান পরাগ নেন ক্যারিয়ার-সেরা ৫ উইকেট (৫/২৫), সঙ্গ দেন বাঁহাতি স্পিনার রাহুল সিং (৪/৪৪)। ফলে সার্ভিসেসও থেমে যায় ১০৮ রানে—মোটে ৫ রানের লিড।
দ্বিতীয় ইনিংসেও শুরুটা ভালো হয়নি আসামের। দিন শেষে স্কোরবোর্ডে ৫৬/৫, লিড মাত্র ৫১ রান। প্রথম দিনেই ২৫টি উইকেট পতন—টিনসুকিয়ার এই ম্যাচটি হয়তো দ্বিতীয় দিনেই শেষ হতে পারে!
মন্তব্য করুন