একটা সময় নিউজিল্যান্ড দলটি ছিল বাংলাদেশের জন্য প্রবল আতঙ্কের। আর সেটা ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই। ঘরে কিংবা বাইরে, কিউইদের কাছে হারই ছিল নিত্য। ওয়ানডে ক্রিকেটে এই দলটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রথম জয় ২০০৮ সালে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে। মিরপুরে সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতলেও বাকি দুটিতে হেরেছিল স্বাগতিকরা।
এরপর থেকেই যেন বদলে যায় চিত্র। ২০১০ সালে ড্যানিয়েল ভেট্টরির নেতৃত্বে চার ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে আসে নিউজিল্যান্ড। সেই সিরিজটা ছিল বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয়। কারণ বাংলাদেশ এই সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল কিউইদের। ভক্তদের মুখে সিরিজটির নাম হয়ে গিয়েছিল ‘বাংলাওয়াশ।’
মজার ব্যাপার হলো, এর পর থেকেই ঘরের মাঠে আর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডেতে হারেনি বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে আসা নিউজিল্যান্ড পেয়েছিল ধবল ধোলাইয়ের লজ্জা। এরপর অবশ্য ১৪টি ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল, সব ম্যাচই হয়েছে বাংলাদেশের বাইরে। নিউজিল্যান্ড জিতেছে ১২টিতে, বাংলাদেশের জয় দুটি।
তার মানে বাংলাদেশের মাটিতে ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের সর্বশেষ জয় ২০০৮ সালে। ১০ বছর পর আবার দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ খেলতে এসেছে নিউজিল্যান্ড। বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। দেড় দশক পর বাংলাদেশের মাটিতে ওয়ানডেতে জয়ের জন্য পাখির চোখ করে আছে সফরকারীরা।
এশিয়া কাপের পর নিউজিল্যান্ড সিরিজে বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন একাধিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ফেরা। অধিনায়ক লিটন দাসের নেতৃত্বে এই দল কেমন করবে কিউইদের বিরুদ্ধে, তাই দেখার বিষয়।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড মুখোমুখি হয়েছে ৩৮ ম্যাচে। এর মধ্যে সিংহভাগ জয়ই কিউইদের, ২৮টি। বাংলাদেশ পেয়েছে ১০ জয়। ঘরের মাঠের পরিসংখ্যানে অবশ্য এগিয়ে থাকছে বাংলাদেশই। ১৩বারের মোকাবিলায় বাংলাদেশের জয় ৮টিতে। হার ৫টি। তবে নিউজিল্যান্ডের হোম গ্রাউন্ড পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ যোজন যোজন দূরে। এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ১৬টি ওয়ানডে খেললেও জয়ের দেখা পায়নি টাইগাররা।
বাংলাদেশ সফরে এবার নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক পেসার লকি ফার্গুসন। প্রথমবারের মতো অধিনায়ক হয়েই চলে এসেছেন বাংলাদেশে। সব মিলিয়ে তার জন্য সফরটি বেশ চ্যালেঞ্জের। বিশেষ করে হোম গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ কঠিন প্রতিপক্ষ, তা মানছেন ফার্গুসন।
বুধবার ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে কিউই অধিনায়ক বলেন, ‘দেখুন, প্রতিটি সিরিজই আমরা জয়ের জন্য খেলি। বাংলাদেশ তাদের কন্ডিশনে খুবই ভালো, আমাদের জন্য এখানে বিশাল এক চ্যালেঞ্জ।’ তবে শুরুটা ভালো হবে এমন আশাবাদ তার, ‘আমরা জানি, প্রথম ম্যাচের প্রথম বল দিয়েই শুরু হবে সব। ফলে আগামীকাল কী আসছে—সেটির দিকে নজর দেওয়া, কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। আর আমরা যারা আগে খেলিনি এখানে, আমাদের আরও দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে।’
নিউজিল্যান্ড সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে এসেছিল ২০২১ সালে। সেবার পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছিল তারা, নিয়মিত অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসনের বদলে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন টম ল্যাথাম। উইলিয়ামসন, ল্যাথাম বা টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক টিম সাউদি—এ সিরিজে কেউই নেই। অধিনায়কত্বের ভার তাই এসে পড়েছে ফার্গুসনের ওপর। কাইল মিলস, গেভিন লারসেন ও সাউদির পর চতুর্থ বিশেষজ্ঞ পেসার হিসেবে ওয়ানডেতে কিউইদের অধিনায়কত্ব করবেন তিনি।
মন্তব্য করুন