

গ্রিনল্যান্ডে বিশেষ দূত নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করার ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্ক। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে তিনি গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের জন্য বিশেষ দূত হিসেবে লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রিকে নিয়োগ দিয়েছেন। গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, যেটিকে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত করার হুমকি ট্রাম্প আগেও একাধিকবার দিয়েছেন।
নিয়োগ গ্রহণের পর ল্যান্ড্রি গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। তবে এটি ডেনমার্কের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন রাসমুসেন। তিনি বলেন, ওয়াশিংটনকে অবশ্যই ডেনমার্কের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করতে হবে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে শিগগিরই ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করবে।
ন্যাটো মিত্র হওয়া সত্ত্বেও, গ্রিনল্যান্ড ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসন বারবার ডেনমার্কের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। সম্পদসমৃদ্ধ এই আর্কটিক দ্বীপটি নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন—এমন দাবি করে ট্রাম্প সামরিক শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনাও নাকচ করেননি। গত মার্চে তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র যতদূর যেতে হয়, ততদূরই যাবে।
ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ড—উভয় পক্ষই বারবার বলেছে, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে সেখানকার জনগণই। চলতি বছরের জানুয়ারিতে করা এক জরিপে দেখা গেছে, গ্রিনল্যান্ডের প্রায় ৫৭ হাজার বাসিন্দার অধিকাংশ ডেনমার্কের কাছ থেকে স্বাধীনতা চাইলেও যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে আগ্রহী নয়।
রোববার রাতে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ ল্যান্ড্রির নিয়োগের ঘোষণা দিয়ে বলেন, গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ল্যান্ড্রি ভালোভাবেই বোঝেন এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ জোরালোভাবে এগিয়ে নেবেন।
এর জবাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ল্যান্ড্রি লেখেন, গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়ে আমি সম্মানিত।
গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেন্স-ফ্রেডেরিক নিলসেন বলেছেন, এই নিয়োগ গ্রিনল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ বাস্তবতায় কোনো পরিবর্তন আনবে না। তবে এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ডেনমার্কের মধ্যকার চলমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
উল্লেখ্য, গত আগস্টে গ্রিনল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে ডেনমার্ক যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছিল। চলতি মাসের শুরুতে ডেনিশ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থাও সতর্ক করে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র তার অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে নিজের ইচ্ছা চাপিয়ে দিচ্ছে এবং বন্ধু ও প্রতিপক্ষ উভয়ের বিরুদ্ধেই সামরিক হুমকি দিচ্ছে।
মন্তব্য করুন