ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন তারা। আসরের শুরুর আগে কত আশা ছিল- তাদের নিয়ে ধারণা করা হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার পর প্রথম দল হবে যারা শিরোপা ধরে রাখতে সক্ষম হবে কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরু থেকেই খাপছাড়া ২০১৯ সালের শিরোপা জয়ী দল ইংল্যান্ড। একমাত্র বাংলাদেশ বাদে বাকি চার ম্যাচে হেরে এবারের আসর থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় ছিল তারা। টিকে থাকতে হলে ভারতের কাছে জয় বাদে অন্য কোনো অপশন ছিল না কিন্তু তা করে দেখাতে পারল না জো রুট-মঈন আলীরা। ফল ভারতের কাছে ১০০ রানের পরাজয়। এতে করে গাণিতিকভাবে টিকে থাকলেও কার্যত ইংলিশদের বিশ্বকাপের স্বপ্ন এখানেই শেষ।
লখনৌর একানা স্টেডিয়ামে রোববার (২৯ অক্টোবর) ইংল্যান্ডকে ১০০ রানে হারিয়েছে ভারত। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে রোহিত শর্মার ব্যাটে ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রানের স্বল্প সংগ্রহ পায় ভারত। জবাবে বুমরাহ-শামি জুটির বোলিং দাপটে মাত্র ১২৯ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি। ক্রিস ওকস ও ডেভিড উইলির বোলিংয়ে মাত্র ৪০ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় ভারত। শুভমান গিল ৯ ও শ্রেয়াস আইয়ার ৪ রান করলেও এদিন ডাক মারেন বিরাট কোহলি।
কেএল রাহুলের সঙ্গে ৯১ রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৫৮ বলে ৩ চারে ৩৯ রান করে উইলির শিকারে পরিণত হন রাহুল। রাহুলের বিদায়ের পর সূর্যকুমারের সঙ্গে জুটি গড়েন রোহিত। এই জুটিতে ৩৩ রান যোগ করেন তারা।
কঠিন উইকেটে ইংল্যান্ডের বোলিং দারুণ সামলেছেন রোহিত। ১০১ বলে ১০ চার ও ৩ ছয়ে ৮৭ রান করে আদিল রশিদের শিকারে পরিণত হন ভারত অধিনায়ক।
রোহিতের বিদায়ের পর আশা যাওয়ার মিছিলেই বিশ্বকাপে প্রথম অর্ধশতকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সূর্যকুমার। কিন্তু ৪৭ বলে ৪৯ রান করে উইলির শিকারে পরিণত হন তিনিও। জাসপ্রীত বুমরাহ শেষের দিকে ১৬ রান করেন।
ইংল্যান্ডের পক্ষে ডেভিড উইলি ১০ ওভারে ২ মেডেনসহ ৪৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ ২টি করে উইকেট শিকার করেন। মার্ক উডের ভাগ্যে জোটে ১টি উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খারাপ করেনি ইংল্যান্ড। মালান ও জনি বেয়ারস্টোর ওপেনিং জুটিতে ৩০ রান আসে। ১৭ বলে ১৬ রান করা মালান বুমরাহর বলে বোল্ড হতেই ধস নামে ইংল্যান্ডের ইনিংসে। মালানকে ফেরানোর পরের বলেই রুটকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন তিনি। ব্যাটিং অর্ডার এগিয়ে নিয়ে চার নম্বরে নেমেছিলেন বেন স্টোকস। কিন্তু ১০ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি এই অলরাউন্ডার। মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হয়ে যান। পাওয়ার প্লের ১০ ওভার শেষ হওয়ার আগে জনি বেয়ারস্টোর উইকেটও হারায় ইংল্যান্ড। দুরন্ত মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২৩ বলে ১৪ রান করেন বেয়ারস্টো। ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন কাঁপছে ইংল্যান্ড।
কাছাকাছি অবস্থা থেকে ভারতকে রোহিত উদ্ধার করলেও ইংল্যান্ডকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ জস বাটলার। ১০ রান করেই কুলদিপ যাদবের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ৫২!
একশর নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় থাকা ইংল্যান্ড মঈন আলী ও লিয়াম লিভিংস্টোনের ২৯ রানের জুটিতে কিছুটা শক্তি পায়। কিন্তু ১৫ রান করা মঈনকে ফিরিয়ে ফের উল্লাসে মাতেন শামি। তখন তার বোলিং ফিগারটা দেখার মতন, ৬ রানে ৩ উইকেট!
দলীয় ৯৮ রানে ক্রিস ওকস (১০) ও লিভিংস্টোনের (২৭) উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ওকসকে ফেরান জাদেজা আর ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ স্কোরার লিভিংস্টোনকে ফেরান কুলদীপ যাদব।
ডেভিড উইলি ও আদিল রশিদ মিলে ২৪ রানের জুটিতে একশ পার করিয়ে দেন ইংল্যান্ডকে। ১২২ রানের মাথায় ১৩ রান করা রশিদকে বোল্ড করেন শামি। আরে ১২৯ রানে উডকে দারুণ এক ইয়োর্কারে বিদায় করেন জাসপ্রীত বুমরাহ।
ভারতের পক্ষে মোহাম্মদ শামি ৭ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন। বুমরাহ ৩২ রানে শিকার করেন ৩ উইকেট। ২টি উইকেট শিকার করেন কুলদীপও। বাকি উইকেটটি গেছে রবীন্দ্র জাদেজার ঝুলিতে।
মন্তব্য করুন