কয়েক বছর আগেও আপনি যদি কোন ফুটবল ভক্তকে জিজ্ঞেস করতেন সৌদি প্রো লিগের চ্যাম্পিয়ন কে? নির্ঘাত আপনাকে নেতিবাচক উত্তর শোনা লাগত। কিন্তু পাঁচ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো সৌদিতে যাওয়ার পরই হুট করেই দেশটি আমূল পরিবর্তন এনেছে ফুটবলে। কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করে নতুন রূপে সাজাচ্ছে সৌদি প্রো লিগকে। এমনকি লিগে বিদেশি নামী দামী ফুটবলার আনতে এবং তাদের সকল প্রকার স্বাধীনতা দিতে যে ইসলামের শরিয়তে পুরো দেশ পরিচালিত হয় সেই শরিয়তও শিথিল করছে দেশটি।
গত জানুয়ারি থেকে যেভাবে একের পর এক ইউরোপের ক্লাবগুলোর তারকা ফুটবলারদের দিকে নজর দিচ্ছে সৌদি আরবের ক্লাবগুলো, তাতে বিপদেই পড়েছে ইউরোপের বড় বড় দলগুলো। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পথ ধরে এখন সৌদি প্রো লিগে নাম লিখিয়েছেন কান্তে, বেনজেমা, ফিরমিনো, নেভেস ও নেইমারের মতো তারকা ফুটবলাররা। আর এই তারকা ফুটবলারদের দলে টানতে সৌদি ক্লাবগুলোকে খরচ করতে হচ্ছে বিপুল সংখ্যক অর্থ।
তবে শুধু যে অর্থ খরচ করে দলে তারকা ফুটবলার এনেই যে তাদের ধরে রাখা যাবে তা নয়। ইউরোপ থেকে আনা ফুটবলারদের স্বাধীনতার কথাও ভাবতে হচ্ছে তাদের। যার কারণে নিজেদের দেশের নিয়ম কানুনেও পরিবর্তন আনতে বিন্দুমাত্র পিছপা হচ্ছে না তারা। বিদেশি তারকাদের দলে আনতে ইসলামের শরিয়তের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া দেশটির সরকার তাদের দেশ পরিচালনার নিয়ম কানুনেও পরিবর্তন আনছে। বিদেশিদের জন্য শিথিল করছে শরিয়তের বিধিবিধান।
মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ায় এতদিন সৌদি আরবে বিয়ে বহির্ভূত কোনো সম্পর্কে জড়াতে পারতো না দেশটির বাসিন্দারা। বিয়ের আগে একসঙ্গে ছেলে মেয়ের থাকার বিষয়টা ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি সরকার বদল এনেছে সেই নিয়মটিতে । রোনালদো ও নেইমারের জন্য দেয়া হয়েছে ছাড়। শরিয়তকে পাশে রেখে বিয়ে না করেই প্রেমিকাদের নিয়ে একসঙ্গে বসবাস করছেন তারা। তবে এই সুযোগ শুধুই পাশ্চাত্যের নাগরিকদের জন্যই প্রযোজ্য। বাকিদের জন্য কঠোর আইনে একচুল ছাড় দিতে রাজি নয় দেশটি।
এছাড়াও বিদেশি তারকাদের প্রেমিকারা খোলামেলা পোশাকেই ঘুরে বেরাতে দেখা যাচ্ছে দেশটিতে। যদিও সৌদি আরবে মেয়েদের পোশাক পরিধান নিয়ে আছে কঠোর বিধান। তবে ফুটবলকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে এখানেও শিথিলতা দেখা যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন