ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ আবারও ফিরছে জমজমাট প্রতিযোগিতা ও উত্তেজনা নিয়ে। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় অ্যানফিল্ডে বোর্নমাউথের বিপক্ষে নতুন মৌসুম শুরু করবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। গত মৌসুমের সেরা চার—লিভারপুল, আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটি ও চেলসিই এবারও শিরোপার মূল দাবিদার হিসেবে মৌসুম শুরু করছে। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, নিউক্যাসল ও অ্যাস্টন ভিলা চায় ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় জায়গা নিশ্চিত করতে, আর টটেনহ্যাম নতুন কোচের অধীনে স্থিতি ফেরাতে মরিয়া।
লিভারপুল: নতুন রূপে শিরোপা রক্ষার লড়াই
আর্নে স্লটের অধীনে দুর্দান্ত মৌসুম কাটিয়ে নতুন মৌসুমে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরেছে লিভারপুল। ফ্লোরিয়ান ভার্টজ ও হুগো একিতিকে যুক্ত হয়ে আক্রমণভাগে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। ফুল ব্যাকে এসেছে জেরেমি ফ্রিমপং ও মিলোস কেরকেজ। লুইস দিয়াজ ও দারউইন নুনেজ বিদায় নিলেও মোহাম্মদ সালাহকে ঘিরে নতুন আক্রমণ সাজানো হয়েছে। ডিফেন্স শক্ত করতে মারক গুহি ও জিওভান্নি লিওনির চুক্তিও প্রায় চূড়ান্ত।
আর্সেনাল: অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণের মিশন
গত মৌসুমে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ায় আর্সেনাল এবার চেয়েছে দলে গভীরতা বাড়াতে। মিকেল আর্তেতা এনেছেন মার্টিন সুবিমেন্দি, ভিক্টর গিয়কেরেস ও ননি মাদুয়েকে। ইনজুরিতে ভোগা গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা যদি ফিট থাকে, তবে এবার গোলের সুযোগ নষ্ট না করাই হবে মূল চাবিকাঠি।
ম্যানচেস্টার সিটি: পুনরুত্থানের চ্যালেঞ্জ
গত মৌসুমে খারাপ শুরুর পরও তৃতীয় হয়েছিল সিটি। এবার এসেছে তিজানি রেইজন্ডার্স, রায়ান আইত-নৌরি ও রায়ান চেরকি। তবে রদ্রির ইনজুরি ও কভাচিচ-ফোডেনের অনুপস্থিতি মাঝমাঠে বড় শূন্যতা তৈরি করেছে। গার্দিওলার জন্য এই সমস্যা সমাধান করাই হবে মৌসুমের বড় পরীক্ষা।
চেলসি: বদলের ভিড়ে স্থিতি খোঁজা
কনফারেন্স লিগ ও ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের পর চেলসি এবার চায় ঘরোয়া মঞ্চে আধিপত্য। জোয়াও পেদ্রো ও জেমি গিটেন্সসহ আট নতুন সাইনিং স্কোয়াডে নতুন উদ্দীপনা এনেছে। তবে বারবার দলে বড় পরিবর্তন আসা ম্যানেজার এনজো মায়েরেসকার জন্য স্থিতি রক্ষা কঠিন করে তুলতে পারে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বাকিরা
গোল খরায় ভোগা ইউনাইটেড দলে যুক্ত করেছে বেনজামিন সেসকো, ব্রায়ান এমবেউমো ও মাথ্যুস কুনহা। তবে মাঝমাঠে গভীরতার অভাব রয়ে গেছে। নতুন মৌসুমে রুবেন আমোরিমের অধীনে বড় পরিবর্তন আশা করছে সমর্থকরা।
অন্যদিকে নিউক্যাসলকে নতুন মৌসুমের শুরুতে ভাবাচ্ছে আলেকজান্ডার ইসাকের ভবিষ্যৎ, যিনি গত মৌসুমে দলের এক-তৃতীয়াংশ গোল করেছিলেন। অ্যাস্টন ভিলা সীমিত পরিবর্তনে আস্থা রেখেছে, তবে ইউরোপীয় ফুটবলে ধারাবাহিকতা বজায় রাখাই হবে তাদের বড় লক্ষ্য।
টটেনহ্যাম: নতুন কোচে নতুন শুরু
আঙ্গে পোস্টেকগ্লুকে বিদায় দিয়ে এসেছে থমাস ফ্র্যাঙ্ক। রক্ষণে নতুন সেন্টার-ব্যাক ও জোয়াও পালিনহার আগমন ইতিবাচক হলেও সন হিউং-মিন বিদায় নেওয়া এবং জেমস ম্যাডিসনের ইনজুরি আক্রমণভাগকে দুর্বল করেছে। মৌসুমে সম্মানজনক অবস্থান পেতে হলে দ্রুতই তাল খুঁজে পেতে হবে স্পার্সকে।
এবারের প্রিমিয়ার লিগ তাই শুধু শিরোপার লড়াই নয়—এটা হবে শক্তি, কৌশল ও মানসিকতার এক বিশাল পরীক্ষা। শেষ পর্যন্ত কে হাসবে, তা বলবে সময়ই।
মন্তব্য করুন