

ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার জুনিয়রের ভবিষ্যৎ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরলেও নিজের পুরনো ছন্দ খুঁজে পাননি তিনি। বারবার চোট, দলের বাজে পারফরম্যান্স আর ব্যক্তিগত ফিটনেস– সব মিলিয়ে ৩৩ বছর বয়সে নেইমারের ক্যারিয়ার যেন এক ‘অবসাদগ্রস্ত অধ্যায়ে’ দাঁড়িয়েছে।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম স্পোর্ট-এর তথ্যমতে, নেইমার এখন দুটি সম্ভাবনার মধ্যে ভাবছেন। একটি হলো সান্তোসের সঙ্গে আরও ছয় মাসের জন্য চুক্তি নবায়ন করা, অন্যটি– লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়া।
নেইমারের জন্য ইউরোপীয় ফুটবলের দরজা আপাতত বন্ধ। ইনজুরির ধকল আর মাঠে উপস্থিতির ঘাটতি বড় ক্লাবগুলোকে পিছিয়ে দিয়েছে। বার্সেলোনা ও পিএসজির সাবেক এই ফরোয়ার্ডকে অনেকেই এখন ‘ডাউনওয়ার্ড স্পাইরাল’-এ থাকা এক প্রতিভা হিসেবে দেখছেন।
সৌদি ক্লাব আল-হিলাল থেকে মুক্ত হয়ে নেইমার এ বছরের শুরুতে সান্তোসে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু চোটে ভুগে বেশিরভাগ সময়ই মাঠের বাইরে কাটাতে হয়েছে। দলের রেলিগেশন লড়াইয়ে কার্যত দর্শক হয়ে থেকেছেন তিনি। তবু সামনে বড় লক্ষ্য– ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয়ে খেলার আশা। এজন্যই তিনি চান এমন এক জায়গায় খেলতে, যেখানে মিডিয়া আলোয় ফিরবেন এবং জাতীয় দলে নিজের জায়গা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।
ইন্টার মায়ামির মালিক ডেভিড বেকহ্যাম দীর্ঘদিন ধরেই বড় তারকাদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছেন। মেসি ইতোমধ্যেই তিন বছরের চুক্তিতে যুক্ত হয়েছেন। তার সঙ্গে আছেন লুইস সুয়ারেজ, জর্দি আলবা ও সার্জিও বুসকেটসের মতো সাবেক বার্সা সতীর্থরা।
২০২৫ মৌসুম শেষে আলবা ও বুসকেটসের অবসরের পর ইন্টার মায়ামির দুটি ‘ডিজাইনেটেড প্লেয়ার স্পট’ খালি থাকবে। স্পোর্ট জানিয়েছে, ক্লাবটি চায় নেইমার তার মধ্যে একটি জায়গা পূরণ করুন।
নেইমার নিজেও আগেই বলেছিলেন, ‘মেসি ও সুয়ারেজের সঙ্গে আবার খেলতে পারলে দারুণ লাগবে। আমরা এখনো কথা বলি, বন্ধুত্ব আমাদের অটুট। সেই ত্রয়ীকে আবার মাঠে দেখা সত্যিই অসাধারণ হবে।’
বর্তমানে নেইমার হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে ভুগছেন, তবু তার ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা থামছে না। ইউরোপের ক্লাবগুলো আগ্রহ না দেখালেও মায়ামির প্রস্তাব বেশ আকর্ষণীয়। জীবনযাত্রা, সেলিব্রিটি দুনিয়ার কাছাকাছি থাকা– এসব বিষয়ও নেইমারের সিদ্ধান্তে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
সবশেষে স্পোর্ট জানিয়েছে, সান্তোস ও ইন্টার মায়ামি ছাড়া এখনো পর্যন্ত অন্য কোনো ক্লাব থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসেনি। তাই ব্রাজিলিয়ান এই সুপারস্টারের পরবর্তী গন্তব্য হতে পারে– লিওনেল মেসির শহর, সানশাইন স্টেটের মায়ামি।
ফুটবল বিশ্ব আবারও কি দেখতে চলেছে সেই স্বপ্নের ‘এমএসএন’ ত্রয়ীকে? উত্তরটা এখনো সময়ের অপেক্ষা। তবে নেইমারের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে, এই গল্পের পরবর্তী অধ্যায়–পুনর্জন্ম নাকি পরিসমাপ্তি।
মন্তব্য করুন