

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের আক্রমণের ঝড় থামাতে একাই লড়লেন রিয়াল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া। কিন্তু তার ‘অলৌকিক’ সেভগুলোও যথেষ্ট ছিল না রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষাকবচ হতে। চ্যাম্পিয়নস লিগের লিগ পর্বে অ্যানফিল্ডে ইংলিশ জায়ান্টদের বিপক্ষে ১-০ গোলের হারে মৌসুমের দ্বিতীয় পরাজয়ের স্বাদ পেল স্প্যানিশ ক্লাবটি।
পুরো ম্যাচজুড়ে রিয়ালের রক্ষণভাগ ছিল ছন্নছাড়া, মাঝমাঠ ছিল দিশাহীন। লিভারপুলের হাইপ্রেস, গতি ও বল দখলের চাপের সামনে হার মানতে হয় জাবি আলোনসোর শিষ্যদের। একমাত্র কারণ, ব্যবধানটা বাড়েনি—তা কোর্তোয়ার অসাধারণ ছয়টি সেভ। সোবোসলাই, ম্যাক অ্যালিস্টার, ভ্যান ডাইক, একিতিকে ও গাকপো—একজন নয়, একাধিক তারকার কাছ থেকে নিশ্চিত গোল ঠেকিয়েছেন তিনি।
তবু শেষ পর্যন্ত রক্ষা হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাক অ্যালিস্টারের নিখুঁত হেডে এগিয়ে যায় লিভারপুল। গোলটি যেন রিয়ালের মনোবল চূর্ণ করে দেয়। প্রতিআক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেছে মাদ্রিদ, তবে বেলিংহ্যাম বা এমবাপ্পে—কারও কাছ থেকেই তেমন সাড়া মেলেনি।
ম্যাচের শুরুতেই রিয়াল খেলায় আসে ক্লাসিকোতে ব্যবহৃত একই ফরমেশনে। ক্যামাভিঙ্গাকে ডান প্রান্তে রেখে মাঝমাঠে ভরসা ছিল বেলিংহ্যাম-গুলের-চুয়ামেনির কাঁধে। কিন্তু হাই প্রেসিংয়ে খেলতে থাকা লিভারপুলের বিপক্ষে প্রথমার্ধেই বারবার ভুল করেছে রিয়াল ডিফেন্স। হুইজেনের ভুলে একিতিকেকে সুযোগ উপহার দেন, যা থেকে সোবোসলাইয়ের একক প্রচেষ্টা কোর্তোয়ার পায়ে ঠেকে রক্ষা পায় দল।
তারপরই শুরু হয় কোর্তোয়া-শো। পেনাল্টি বক্সে একের পর এক সেভে যেন প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান তিনি। কিন্তু রিয়ালের বাকি খেলোয়াড়রা তাল মেলাতে পারেননি। আকাশে বল তুললে বারবার হারিয়েছেন ভ্যান ডাইকের কাছে, আর মাঝমাঠে দখল ছিল ম্যাক অ্যালিস্টার ও গ্রাভেনবার্চের।
শেষদিকে সালাহর পাসে গাকপো যখন কাছ থেকে শট নেন, তখনও অবিশ্বাস্য রিফ্লেক্সে ঠেকান কুর্তোয়া। মিলিতাওর ক্লিয়ারেন্সে গোল বাঁচলেও, স্কোরলাইন ১-০-তেই থেকে যায়—রিয়ালের পরাজয়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে।
চ্যাম্পিয়নস লিগের পরবর্তী রাউন্ডে ওঠা প্রায় নিশ্চিত হলেও, অ্যানফিল্ডের এই হার জাবি আলোনসোর জন্য বড় সতর্কবার্তা। কারণ, গোলরক্ষক ও স্ট্রাইকার ছাড়া এই দলে এখনো দেখা যাচ্ছে না সেই ক্লাসিক মাদ্রিদীয় ছাপ—যেখানে ছিল ব্যক্তিত্ব, পরিপূর্ণতা ও মানসম্পন্ন ফুটবল।
মন্তব্য করুন