

তুরস্কের ফুটবলে ছড়িয়ে পড়েছে এক নজিরবিহীন ঝড়। বেটিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ায় দেশের শীর্ষ ক্লাব গালাতাসারাই ও বেসিকতাসের খেলোয়াড়সহ মোট ১,০২৪ জন ফুটবলারকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে তুর্কিশ ফুটবল ফেডারেশন (টিএফএফ)।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে টিএফএফ জানায়, তদন্তে যেসব খেলোয়াড়ের বেটিং–সংক্রান্ত সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের সবাইকে পেশাদার ফুটবল শৃঙ্খলা বোর্ডে (পিএফডিকে) পাঠানো হয়েছে। এই তালিকায় সুপার লিগ থেকে ২৭ জন এবং দ্বিতীয় স্তর ১. লিগ থেকে ৭৭ জন খেলোয়াড় রয়েছেন।
সবচেয়ে আলোচিত নাম গালাতাসারাইয়ের রক্ষণভাগের তারকা এরেন এলমালি। চ্যাম্পিয়নস লিগে নিয়মিত খেলা এই ডিফেন্ডারকে চলতি মাসে স্পেন ও বুলগেরিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের স্কোয়াড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার সতীর্থ মেতেহান বালতাচি এবং বেসিকতাসের নেচিপ উয়সাল ও এরসিন দেস্তানোগ্লুও নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছেন।
গালাতাসারাই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা “অত্যন্ত সংবেদনশীল এই প্রক্রিয়াটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।” অন্যদিকে বেসিকতাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের দুই খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তবে ক্লাবটি “পুরোপুরি বিশ্বাস রাখছে যে তারা নির্দোষ প্রমাণিত হবে।”
ব্যক্তিগতভাবে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন এলমালি। সোমবার রাতে ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে তিনি লেখেন, “আমার নামটি এই মামলায় এসেছে প্রায় পাঁচ বছর আগের এক বেটিং ঘটনার কারণে, যেখানে আমার নিজস্ব দল কোনোভাবে জড়িত ছিল না। এরপর থেকে আমি কোনো ধরনের বেটিংয়ে যুক্ত হইনি।”
এই বিশাল কেলেঙ্কারির প্রভাবে তুরস্কের তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের লিগ দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে শীর্ষ দুই বিভাগে খেলা চলবে। টিএফএফ ইতোমধ্যেই ফিফাকে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন ক্লাবগুলো স্কোয়াড ঘাটতি পূরণে অতিরিক্ত ১৫ দিনের ট্রান্সফার সময় পায়।
এটাই প্রথম নয়—গত মাসেও টিএফএফ ১৪৯ জন রেফারিকে একই ধরনের বেটিং কেলেঙ্কারিতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছিল। তদন্তে তখন জানা যায়, ৫৭১ জন সক্রিয় রেফারির মধ্যে ৩৭১ জনেরই বেটিং অ্যাকাউন্ট রয়েছে, আর তাদের মধ্যে ১৫২ জন নিয়মিতভাবে জুয়ায় অংশ নেন।
তুর্কি ফুটবলের ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় শৃঙ্খলাজনিত সংকট। গালাতাসারাই, বেসিকতাস ও ফেনারবাচে—এই তিন জায়ান্ট মিলে যেখানে জিতেছে ৬৯ মৌসুমের ৬০টি লিগ শিরোপা, সেখানে এমন কেলেঙ্কারি তুরস্কের ফুটবল ভাবমূর্তিতে গভীর দাগ ফেলেছে।
মন্তব্য করুন