আফগানিস্তানে দাবা খেলা এখন নিষিদ্ধ। তালেবান সরকার রোববার (১১ মে) ঘোষণা দিয়েছে, ইসলামি শরিয়াহর আলোকে খেলা পর্যালোচনা না হওয়া পর্যন্ত দাবা খেলার ওপর স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। তালেবান মনে করছে, দাবা খেলায় জুয়া প্ররোচিত হতে পারে—যা ইসলামের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ।
তালেবানের ক্রীড়া অধিদপ্তরের মুখপাত্র আতাল মাশওয়ানি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে যতক্ষণ না খেলার বৈধতা নিশ্চিত হচ্ছে, ততক্ষণ দাবা খেলা আফগানিস্তানে স্থগিত থাকবে।’
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কাবুলের ছোট ছোট সামাজিক আড্ডার স্থানগুলোতে নেমে এসেছে হতাশা। বহুদিন ধরে দাবা খেলার আয়োজন করে আসা এক ক্যাফে চালক আজিজুল্লাহ গুলজাদা এএফপিকে বলেন, ‘যুবসমাজের বিনোদনের সুযোগ সীমিত। অনেকেই প্রতিদিন এখানে এসে দাবা খেলত। এই নিষেধাজ্ঞা শুধু আমার ব্যবসার ক্ষতি নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলবে।’
তিনি আরও জানান, তার ক্যাফেতে কখনও জুয়ার ঘটনা ঘটেনি এবং মুসলিমপ্রধান বহু দেশেই দাবা খেলা জনপ্রিয়ভাবে চালু রয়েছে।
এটাই প্রথম নয়, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর ২০২১ সাল থেকে ধীরে ধীরে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে চলেছে। গত বছর পেশাদার এমএমএ (মিক্সড মার্শাল আর্টস) প্রতিযোগিতা নিষিদ্ধ করা হয়, একে ‘অত্যন্ত সহিংস’ ও ‘শরিয়াহবিরোধী’ বলে উল্লেখ করে।
নারীদের ক্ষেত্রে তো খেলার সুযোগ প্রায় সম্পূর্ণভাবেই বন্ধ। তালেবান সরকারের এসব সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও ক্রীড়া সংস্থাগুলো বারবার ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ ও ‘বৈষম্যমূলক’ বলে নিন্দা করেছে।
বর্তমানে দাবা নিষেধাজ্ঞা কবে উঠবে বা আদৌ উঠবে কি না, তা নিয়ে কোনো সময়সীমা ঘোষণা করেনি তালেবান সরকার। খেলাটি ইসলামি শরিয়াহ মেনে চলে কি না, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যাও তারা দেয়নি।
মন্তব্য করুন