আমরা এখন প্রায়ই নানা কাজে কিউআর কোড ব্যবহার করি—রেস্তোরাঁয় বসে মেনু দেখতে, ওয়াইফাই কানেক্ট করতে, পেমেন্ট করতে কিংবা ওয়েবসাইটে লগইন করতেও। খুব সহজ আর সময় বাঁচায় বলেই এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কিন্তু জানেন কি, এই সহজ পদ্ধতিটাই যদি একটু অসতর্কভাবে ব্যবহার করেন, তাহলে বড় ধরনের প্রতারণার শিকারও হতে পারেন? হ্যাঁ, ঠিক তাই। অনেক হ্যাকার এখন নকল কিউআর কোড তৈরি করে আমাদের ডিভাইসে ভাইরাস পাঠাতে বা ফিশিং ওয়েবসাইটে নিয়ে যেতে পারে।
তাই কিউআর কোড স্ক্যান করার আগে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা খুব জরুরি। জেনে নিন, কোন কোন ব্যাপারে সতর্ক থাকলে আপনি থাকবেন নিরাপদ:
অনেক সময় প্রতারকরা আসল কিউআর কোডের ওপর একটা স্টিকার দিয়ে তাদের নকল কোড লাগিয়ে দেয়। বাইরে থেকে দেখে এটা বোঝা কঠিন, কিন্তু একটু খেয়াল করলে ধরতে পারবেন। যদি কোডটি কোনো পোস্টার বা দেয়ালে স্টিকার আকারে লাগানো থাকে—বিশেষ করে পার্কিং লট বা ব্যস্ত রেস্তোরাঁর মতো জায়গায়—তাহলে বাড়তি সতর্কতা জরুরি।
কেউ আপনাকে ইমেইল বা মেসেজে কিউআর কোড পাঠালে, আগে যাচাই করুন সেটি আসল কিনা। সন্দেহজনক লোগো, বানান ভুল বা অদ্ভুত ভাষা থাকলে সেটি ব্যবহার না করাই ভালো। হ্যাকাররা অনেক সময় ফেক ওয়েবসাইটে নিয়ে গিয়ে তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।
কিউআর কোড স্ক্যান করার পর যদি কোনো লিংক আসে, চোখ বন্ধ করে ক্লিক না করে আগে URL বা লিংকটি দেখে নিন। প্রকৃত ওয়েবসাইটগুলো সাধারণত তাদের ব্র্যান্ডের সঙ্গে মিল রেখে লিংক তৈরি করে। লিংকে কোনো অদ্ভুত শব্দ বা বানান থাকলে, সেটি ভুয়া হতে পারে।
প্রয়োজনে লিংকটি অনলাইন নিরাপত্তা চেকারে যাচাই করে নিতে পারেন (যেমন: Google Safe Browsing বা VirusTotal)।
কোনো কিউআর কোড স্ক্যান করার পর যদি সেটি আপনার ফোনের ক্যামেরা, লোকেশন, কন্টাক্ট বা মেসেজ অ্যাক্সেস চায়—তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ করুন। সাধারণত কিউআর কোড এমন অনুমতি চায় না, তাই এমন কিছু চাইলে সেটা সন্দেহজনক।
কিউআর কোড আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, কিন্তু সেটার ব্যবহারও হতে হবে বুদ্ধিমানের মতো। একটু সচেতন থাকলেই আপনি প্রতারণা বা হ্যাকিংয়ের মতো ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে পারবেন।
পরবর্তীবার যখন কোনো কিউআর কোড স্ক্যান করবেন, মনে রাখবেন—কোড স্ক্যান করার আগে চোখ কান খোলা রাখুন।
মন্তব্য করুন