সাধারণভাবে প্রতি মাসে নারীদের একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর পিরিয়ড হয়, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ২৮ দিনের চক্রে ঘটে। তবে অনেক নারীর ক্ষেত্রেই এটা নিয়ম মানে না। কারও সময়ের আগে, কারও অনেক পরে, কারও আবার রক্তপাত থামতেই চায় না।
আরও পড়ুন : যে অভ্যাসগুলো ধীরে ধীরে ধ্বংস করছে আপনার মস্তিষ্ক
আরও পড়ুন : হঠাৎ শরীর ফুলে যাচ্ছে? হতে পারে ভেতরে লুকানো বড় কোনো সমস্যা
এই অনিয়ম আসলে স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক—তা বোঝার জন্য আমাদের জানতে হবে এর কারণগুলো। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাহানারা চৌধুরী অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন।
- ২৩ দিনের আগে বা ৩৫ দিনের পরে পিরিয়ড হলে
- এক মাসে ২-৩ বার পিরিয়ড হলে
- মাঝেমাঝে হালকা ব্লিডিং হলে, মাসজুড়েই হালকা রক্তপাত চলতে থাকলে
- রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে বা জমাট রক্ত গেলে
- পিরিয়ড ৭ দিনের বেশি স্থায়ী হলে (যেমন ১০–১৫ দিন একটানা চললে)
তাহলে বুঝতে হবে পিরিয়ড নিয়মের বাইরে যাচ্ছে।
- বয়স অনুযায়ী হরমোনের ওঠানামা (যেমন কিশোরীদের শুরুতে বা মেনোপজের কাছাকাছি বয়সে হরমোন ঠিকমতো কাজ না করায় পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে—এটা স্বাভাবিক।)
- PCOS বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (এটি একটি সাধারণ হরমোনজনিত সমস্যা, যেখানে ওভারি ডিম ছাড়ে না ঠিকভাবে। ফলে পিরিয়ড আসেই না, বা খুব অনিয়মিত আসে। অনেক সময় ওজন বেড়ে যায়, সন্তান ধারণে সমস্যা হয়।)
- জরায়ুতে টিউমার বা পলিপ (যেমন ফাইব্রয়েড, অ্যাডিনোমায়োসিস, পলিপ, এমনকি ক্যানসারও পিরিয়ড অনিয়মের কারণ হতে পারে।)
- গর্ভপাতের পর বা সন্তান জন্মের পর (এই সময়গুলোতেও পিরিয়ড সাময়িকভাবে অনিয়মিত হতে পারে।)
- রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন
প্যাকেটজাত খাবার, ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত চিনি, ঘুমের অনিয়ম, শরীরচর্চার অভাব, মানসিক চাপ—সব মিলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
প্রথমে সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করতে হবে। সাধারণ চিকিৎসা হিসেবে ডাক্তাররা নিচের ব্যবস্থা নিতে পারেন:
- হিমোগ্লোবিন কমে গেলে আয়রন ট্যাবলেট বা ইনজেকশন
- প্রোজেস্টেরন হরমোন বা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল
- প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা, আল্ট্রাসনো করে রোগ নির্ণয়
আরও পড়ুন : গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এড়াতে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
আরও পড়ুন : অল্প বয়সেই চুল পাকলে এই ৫ খাবার রাখুন প্রতিদিনের তালিকায়
- নিয়মমাফিক ওষুধ খাওয়া
- খাওয়াদাওয়ায় পরিবর্তন, ঘুম ও স্ট্রেস কমানো
অনিয়মিত পিরিয়ড নিজেই কোনো রোগ নয়, বরং এটা অনেক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। তাই দেরি না করে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই ভালো। নিয়মিত পিরিয়ড শুধু গর্ভধারণের জন্য নয়, একজন নারীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও জরুরি।
মন্তব্য করুন