নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর এবার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে দেশত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে জান্তা। গত জুলাইয়ের শেষে দেশটির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে উৎখাতের পর এবার তারা রাষ্ট্রদূতকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে দেশটির মধ্যকার চলমান সংকট আরও বাড়ছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২৫ আগস্ট) ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে দেশত্যাগের নির্দেশ ছাড়াও মালি ও বুরকিনা ফাসো থেকে প্রতিরক্ষা বিভাগে সেনা যুক্ত করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নাইজারে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর জোট ইকোওয়াস গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে হস্তক্ষেপের জন্য স্ট্যান্ডবাই ফোর্স গঠনের পর এমন পদক্ষেপ নিয়েছে জান্তা।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সিলভেইন ইত্তেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি আমন্ত্রণ উপেক্ষা করায় এ পদক্ষেপ নিয়েছে জান্তা। শুক্রবার এ নির্দেশনা সংক্রান্ত চিঠিতে নাইজারের স্বার্থের পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে ইত্তেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এ নির্দেশ মানবেন না। কেননা নাইজারে রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার কোনো অধিকার অভ্যুত্থানকারীদের নেই।
এর আগে দেশটিতে গত ২৬ জুলাই নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে তার বাসভবনে অবরোধ করে রাখে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের বিদ্রোহী সদস্যরা। আটকের পরের দিন বৃহস্পতিবার সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় তারা। এরপরই দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পক্ষে-বিপক্ষে সমাবেশ করতে থাকে সাধারণ মানুষ। এমনকি সমাবেশ থেকে প্রেসিডেন্টের দলের প্রধান কার্যালয়ে আগুন দেন অভ্যুত্থানের সমর্থকরা। ফলে প্রেসিডেন্ট সমর্থক ও অভ্যুত্থানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত থেকে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
এরপর গত ৬ আগস্টের মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে পুনর্বহালের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল ইকোওয়াস। এটি না মানলে নাইজারের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর কড়া বার্তাও দিয়েছিল এ জোট। এরপর গত ১০ আগস্ট নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকার পুনর্বহালে সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য স্ট্যান্ডবাই সেনাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল জোটটি।
এরপর গত ১৭ আগস্ট নাইজারের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপে গঠিত স্ট্যান্ডবাই ফোর্সে যোগ নিতে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো প্রস্তুত বলে জানায় ইকোওয়াস। ওই সময়ে নাইজেরিয়ার প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান জেনারেল ক্রিস্টোফার গোবিন মুসা বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য দাঁড়িয়েছি এবং আমরা এটাকেই পৃষ্ঠপোষকতা করি। আমদের এ ফোর্স গঠন শুধু কেবল প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য নয়। আমাদের মূল লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতি ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
মন্তব্য করুন