পাক-ভারত উত্তেজনার মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক ভালো খবর পেল পাকিস্তান। দীর্ঘদিন পর কুয়েত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা পুনরায় ইস্যু করা শুরু করেছে। কুয়েতের এই পদক্ষেপকে পাকিস্তানের জন্য কৌশলগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শনিবার (২৪ মে) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কুয়েতে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত ড. জাফর ইকবাল জানান, নতুন করে কর্মসংস্থান, পারিবারিক ভ্রমণ, নির্ভরশীল, পর্যটন ও বাণিজ্যিক ভিসাসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা দেওয়া শুরু করেছে কুয়েত।
রাষ্ট্রদূত জানান, কুয়েতের স্বাস্থ্য খাতে এক হাজার ২০০ জন পাকিস্তানি নার্স পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নার্সদের প্রথম দফা দলটি গত সপ্তাহেই যাওয়ার কথা ছিল, তবে আবাসনের সমস্যার কারণে বিলম্ব ঘটে। তিনি জানান, একটি বিশেষ টিম এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে এবং নার্সদের কুয়েতে পাঠানো এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
ড. জাফর ইকবাল আরও জানান, পাকিস্তান ও কুয়েতের মধ্যে নতুন শ্রমসংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। চুক্তি সইয়ের আগেই কিছু বিধান বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে, যা ভবিষ্যতে শ্রমিকদের চলাচল ও সহযোগিতা আরও সহজ করবে।
রাষ্ট্রদূত কুয়েত-পাকিস্তান সম্পর্ককে ‘ভ্রাতৃসুলভ’ বলে উল্লেখ করে বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার আগেই শুরু হয়। তিনি বলেন, ১৯৬০ ও ’৭০-এর দশকে কুয়েতের অবকাঠামো নির্মাণে পাকিস্তানি প্রকৌশলী ও শ্রমিকদের ভূমিকা দুই দেশের মধ্যে একটি গভীর ঐতিহাসিক বন্ধন গড়ে তুলেছে।
বর্তমানে কুয়েতে ৯৩ হাজারের বেশি পাকিস্তানি নাগরিক বসবাস করছেন। তারা স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অন্যান্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
ড. ইকবাল বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি, আবাসন ও অবকাঠামো খাতে পাকিস্তানের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, যা কুয়েতের ভিশন ২০৩৫-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এছাড়া তিনি ইরাকি আগ্রাসনের সময় কুয়েতকে পাকিস্তানের সামরিক সহায়তার কথা স্মরণ করে বলেন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং পারস্পরিক আত্মত্যাগ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করেছে।
তিনি জানান, গত ছয় মাসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও কুয়েতের নেতৃত্বের মধ্যে একাধিক উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ হয়েছে, যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরালো করেছে।
রাষ্ট্রদূত কুয়েতের আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও আঞ্চলিক শান্তিপ্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতেও এই সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ ও ফলপ্রসূ হবে।
মন্তব্য করুন