ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে সংবাদ কাভার করার জেরে এক সাংবাদিককে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে তিনি দেশটির সব রাজবন্দির মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী দিনের বক্তব্যে গুতেরেস এ বিষয়টি তুলে ধরেন। খবর সিএনএন।
গুতেরেস বলেন, রাখাইন রাজ্যসহ মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি এবং বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর দুর্দশা নিয়ে তিনি এখনো গভীর উদ্বিগ্ন। মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে জনগণের দাবি মেনে নিয়ে সব রাজবন্দিকে মুক্তি এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার পথ উন্মুক্তকরণের জরুরি আহ্বানের পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
গত বুধবার সাই জ থাইক নামে এক ফটোসাংবাদিককে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন জান্তা সরকারের আদালত। তিনি মিয়ারমারের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউয়ের সাংবাদিক। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর এটিই কোনো সাংবাদিকককে দেওয়া সর্বোচ্চ কারাদণ্ড।
সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ জানিয়েছে, ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় মোচা কাভার করতে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে গেলে গত ২৩ মে সাই জ থাইককে গ্রেপ্তার করে জান্তা সরকার। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, উসকানি ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। এরপর গত বুধবার ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগারের ভেতর তাকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে তাকে ঠিক কী কারণে এই সাজা দেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট না।
মিয়ানমার নাউয়ের এডিটর-ইন-চিফ সোয়ে উইন বলেন, দীর্ঘ কারাদণ্ডের খবর শুনে সাই জ থাইকের সব সহকর্মী ও আমি ব্যথিত। জান্তা সরকারের অধীনে দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যে সম্পূর্ণ পদদলিত, তার আরেকটি নিদর্শন হলো এই ফটোসাংবাদিকের সাজা। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য দেশের স্বাধীন সাংবাদিকদের চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের ১৫০ জনের বেশি সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে চার সংবাদকর্মী প্রাণও হারিয়েছেন।
মন্তব্য করুন