চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের সঙ্গে ‘খোলামেলা’ ও ‘গঠনমূলক’ আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। আজ রোববার বেইজিংয়ে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের পর এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝির ঝুঁকি রোধে কূটনীতি ও যোগাযোগের পথ খোলা রাখার ওপর জোর দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। পরবর্তী আলোচনার জন্য কিন গ্যাং ওয়াশিংটন সফরে যেতে রাজি হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
এদিকে চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্থিতিশীল, প্রত্যাশিত ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে বেইজিং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে ব্লিংকেনকে জানিয়েছেন কিন গ্যাং।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্কে বড় বাধা তাইওয়ান ইস্যু। এই দ্বীপটিকে নিজেদের অংশ বলে মনে করে চীন। তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়াও চালিয়েছে বেইজিং। তবে তাইওয়ানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। চীনের বিরুদ্ধে তারা তাইওয়ানকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
ব্লিংকেনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় তাইওয়ান ইস্যুও উত্থাপন করেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো তাইওয়ান ইস্যু। এটি চীনের প্রধান স্বার্থের একটি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুদিন বৈঠক করতে আজ রোববার বেইজিংয়ে আসেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো মার্কিন কূটনীতিকের প্রথম চীন সফর এটি।
মার্কিন কর্মকর্তারা আগেই জানিয়েছিলেন, উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক স্থিতিশীল করাই এ আলোচনার লক্ষ্য। তবে এ সফরে খুব একটা অগ্রগতি হবে বলে মনে করছে না যুক্তরাষ্ট্র। উভয়পক্ষই স্পষ্ট করেছে—তারা এ সফর থেকে বড় কোনো প্রত্যাশা করছে না।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চীন সফরের কথা ছিল ব্লিংকেনের। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনের ‘গোয়েন্দা বেলুন’ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হলে ওই সফর বাতিল করা হয়। সফর বাতিলের পাঁচ মাস পর আজ বেইজিংয়ে যান ব্লিংকেন। রোববার দিয়াওইউতাই স্টেট অতিথি ভবনে ব্লিংকেনকে স্বাগত জানান কিন গ্যাং। এরপর করমর্দন করে নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বসেন তারা।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, উচ্চ-স্তরে যোগাযোগ চালু করা এবং বেলুনকাণ্ডের পর দুই দেশের সম্পর্কে যে উত্তেজনা চলে আসছে, তা স্থিতিশীল করতেই ব্লিংকেনের এ চীন সফর। তবে ব্লিংকেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন কিনা, তা জানা যায়নি।
গত নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৈঠক করেছিলেন।
মন্তব্য করুন