যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলছে ভূরাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক উত্তেজনা। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ায় মুখোমুখি বসছেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। আসিয়ান নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে আজ শুক্রবার (১১ জুলাই) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বৈঠক করবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে যখন দক্ষিণ চীন সাগর, বাণিজ্য শুল্ক ও ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে, তখন এ ধরনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে পারে।
বৃহস্পতিবার রুবিও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেন, যেখানে ইউক্রেন ইস্যুতে সম্ভাব্য শান্তি উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয়।
রুবিও জানান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত নতুন শুল্কনীতি এবং চীনের আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক তৎপরতা প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল।
তিনি বলেন, ‘শুল্ক একটি বড় উদ্বেগের বিষয়, তবে একমাত্র নয়। চীনের সামরিক সক্ষমতা ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়েই বেশি দুশ্চিন্তা রয়েছে অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে।’
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন বাণিজ্যচুক্তি না করা দেশগুলোর ওপর ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। এতে মিত্র দেশগুলোও আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছে।
রুবিওর নেতৃত্বাধীন ট্রাম্প প্রশাসন চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিশেষ করে প্রযুক্তি, সামরিক কৌশল ও তাইওয়ান ইস্যুতে। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি ইতোমধ্যেই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তাও সৃষ্টি করেছে।
রুবিও দাবি করেন, চীন রাশিয়াকে পর্দার আড়ালে সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছে। তিনি বলেন, ‘চীন প্রকাশ্যে রাশিয়াকে সহায়তা না করলেও, গোপনে সহযোগিতা করছে। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ।’
এই ইস্যু ওয়াং ই-এর সঙ্গেও আলোচনায় স্থান পাবে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
মালয়েশিয়ায় রুবিও-ওয়াং ই বৈঠক এমন একসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে। এই আলোচনার মাধ্যমে যদি কোনো ধরনের কূটনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হয়, তবে তা শুধু আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্যও ইতিবাচক বার্তা বহন করবে।
মন্তব্য করুন