ক্রমেই উত্তাল হয়ে উঠছে মিয়ানমার। জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ও বিদ্রোহীদের সাথে জান্তা সৈন্যদের লড়াই দেশটির উত্তরাঞ্চলে রূপ নিচ্ছে নতুন মাত্রা। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ লড়াইয়ে সামরিক চৌকি ও স্থাপনার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সেনাবাহিনী। এমন উত্তাপে দেশটিতে আটকে পড়া নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে প্রতিবেশী দেশগুলো। সবশেষ দেশটিতে আটকে পড়া নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাইল্যান্ড।
রোববার (১৯ নভেম্বর) থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহীদের লড়াইয়ে আটকে পড়া দুই শতাধিক থাই নাগরিককে দেশে ফেরানো হবে। এই নাগরিকদের মিয়ানমার থেকে প্রথমে চীন, পরে সেখান থেকে থাইল্যান্ডে ফিরিয়ে আনা হবে। অন্যদিকে লড়াই তীব্র হওয়ায় হাজার হাজার বাসিন্দা প্রতিবেশি ভারতে পালিয়ে গেছেন। এমনকি সেনাবাহিনীরও ৬০ জনের বেশি সদস্য ভারতের মিজোরামে পালিয়েছেন।
দশকের পর দশক মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সাথে লড়াই করছে বিভিন্ন অঞ্চলের জাতিগত সংখ্যালঘু ও অন্যান্য বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলো। দেশটিতে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মাঝে নজিরবিহীন সমন্বয় তৈরি করেছে। যা দেশটির সামরিক বাহিনীকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথে লড়াইয়ে চ্যালেঞ্জের মুখো ফেলেছে। জান্তা বাহিনীকে কোণঠাসা করতে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যরা একযোগ হয়েও হামলা করছে প্রায়ই।
সাম্প্রতিক সমন্বিত এসব হামলায় সামরিক বাহিনীর বেশ কিছু নিরাপত্তা চৌকি ও স্থাপনার দখল নিয়েছে বিদ্রোহীরা। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার বিদ্রোহীদের হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি সব কর্মী ও সামরিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জরুরি প্রয়োজনে সেনাবাহিনীতে কাজ করতে প্রস্তুত করছে।
জানা যায়, দেশটির গণতন্ত্রপন্থি রাজনীতিবিদদের গঠিত ছায়া সরকার কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে জোট গড়ে ‘রোড টু নেপিদো’ অভিযান শুরু করেছে। রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার লক্ষ্যে তারা এই অভিযান শুরু করেছে।
থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ২৬৬ থাই নাগরিকসহ কিছুসংখ্যক ফিলিপিনো এবং সিঙ্গাপুরের নাগরিককে উত্তর শান রাজ্যের লাউকাইং থেকে মিয়ানমার-চীন সীমান্তে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বিদেশিদের এই দলটিকে চীনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। তারপর তারা চীনের কুনমিং শহর থেকে দুটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ব্যাংককে যাবেন; যেখানে তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার এবং কোনও অপরাধমূলক অভিযোগের রেকর্ড আছে কি না তা যাচাইবাছাই করা হবে। তবে মিয়ানমার থেকে নিজ নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের কাজে নিয়োজিত ফ্লাইটের সময় নির্দিষ্ট করে জানায়নি থাইল্যান্ড। তবে দলটি রোববার চীনা সীমান্তে পৌঁছাবেন বলে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন