নববর্ষের দিন হঠাৎ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জাপান। ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। চার দিন পার হলেও এখনো দুই শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। তবে এই চিত্রটা আরও ভয়াবহ হতে পারত। হতাহত ও নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা আরও বেশি হতো। মৃত্যুপুরীতে পরিণত হতে পারত দূরপ্রাচ্যর দেশটি। তবে ছোট্ট এক প্রতিষ্ঠানের সতর্কবার্তায় জাপানের লাখ লাখ মানুষ এ যাত্রায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
প্রতিষ্ঠানটির নাম এনইআরভি। গিহিরন নামে ছোট একটি বেসরকারি সংস্থা এটি পরিচালনা করে। জার্মান ভাষায় গিহিরন শব্দের অর্থ মস্তিষ্ক। এই প্রতিষ্ঠানে মাত্র ১৩ জন পূর্ণকালীন কর্মী কাজ করেন। আকারে ছোট হলেও বছরের পর বছর গুরু দায়িত্ব পালন করে চলেছে এনইআরভি।
বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে মানুষকে সতর্ককরণে কাজ করে এনইআরভি। ভূমিকম্প ছাড়াও সুনামি, আগ্নেয়গিরি, টাইফুন, বন্যা ও ভারী তুষারপাতের মতো দুর্যোগের রিয়েল টাইম তথ্য সরবরাহ করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
জাপানে ঘন ঘন ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির সরকারি আবহাওয়া অফিসও বেশ শক্তিশালী। এরপরও প্রায় সময় দেশের সরকারি সংস্থা ও সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকের চেয়ে দ্রুত ভূমিকম্প নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে থাকে এনইআরভি।
২০১০ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ডাইকি ইশিমোরি সামাজিকমাধ্যম টুইটারে (বর্তমান এক্স) অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন করেন। জাপানে এক্স বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে ২০১১ সালে ভূমিকম্প ও সুনামির পর দুর্যোগ সম্পর্কিত তথ্য লাভের ক্ষেত্রে জাপানিদের কাছে এক্স নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে ওঠে।
এনইআরভি প্রতিষ্ঠার পেছনের গল্প বলতে গিয়ে ইশিমোরি বলেছেন, এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় হিট এনিমেশন টিভি শো নিওন জেনেসিস ইভানজিলিয়নের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ঘটনা নিয়ে নির্মিত এই টিভি শো থেকে নিজের সংস্থার নাম পর্যন্ত ধার করেছেন তিনি। সিনেমায় এনইআরভি নামে একটি প্রতিষ্ঠান মানবজাতিকে বিভিন্ন হুমকি নিয়ে সতর্কবার্তা দিত।
ইশিমোরি বিবিসিকে বলেন, এনইআরভি নামে আমি একটি প্যারোডি অ্যাকাউন্ট খুলি। কেননা সে সময় আমাদের দেশে টুইটার জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল। তখন আমাদের মাত্র ৩০০ অনুসারী ছিল। তবে ২০১১ সালের পর দৃশ্য পাল্টে যায়। বর্তমানে এক্সে ২২ লাখ অনুসারী রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৯ সালে অ্যাপ আসার পর ৪০ লাখবার ডাউনলোড হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার মিশন জাপানকে সব সময় নিরাপদ রাখা। অর্থ উপার্জন আমার লক্ষ্য নয়। সবার কাছে এনইআরভিকে পৌঁছে দিতে চাই। এমনকি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কাছেও।
মন্তব্য করুন