মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনে সংঘাত পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিদ্রোহীদের সঙ্গে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কায় প্রদেশটির রাজধানী সিত্তের আশপাশের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির জান্তা সরকার।
শনিবার (১৫ জুন) এএফপির বরাতে দ্য হিন্দু এ খবর প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, বাসিন্দারা এএফপিকে এ নির্দেশের খবর শুক্রবার (১৪ জুন) জানিয়েছে। বলেছে, গ্রামের বাসিন্দাদের রাজধানী বা অন্য অঞ্চলে চলে যেতে বলা হয়েছে। এ জন্য পাঁচ দিন সময় দেওয়া হয়। নির্দেশ না মানলে সেনাবাহিনী গুলি করবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
বাসিন্দাদের তথ্য মতে, রাখাইনের চারপাশেরর ১৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের রাজধানীতে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। তারা চাইলে অন্যত্র যেতে পারবেন। যাই করা হোক না কেন তা খুব দ্রুত করতে হবে।
এ অঞ্চলটিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করে। এরপর অভিযান আরও জোরদার করে জান্তা সরকার। বর্তমানে গ্রামগুলোর নিয়ন্ত্রণ পাল্টা নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে দুপক্ষ লিপ্ত। এতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
রাখাইনের সিত্তে মিয়ানমারের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ভারতের সঙ্গে যৌথ মালিকানার একটি গভীর সমুদ্রবন্দর রয়েছে। এ ছাড়া অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ হারালে ভৌগোলিকভাবেও চাপে পড়বে জান্তা সরকার।
বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান শুরুর পরিকল্পনার কথা সরাসরি স্বীকার করেনি জান্তা বাহিনী। তারা ওই নির্দেশের কারণ হিসেবে জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করেন।
নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই জ্বলছে মিয়ানমার।
গেল কয়েক বছরে মিয়ানমারের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে দেশটির জাতিগত বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ।
এদিকে মিয়ানমার সংঘাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। গত কয়েক দিনের ঘটনায় টেকনাফের সঙ্গে সেন্টমার্টিন যাতায়াতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সম্প্রতি একাধিক ট্রলারে মিয়ানমার সীমানা অংশ থেকে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ফলে বেশ কিছু দিন ধরে সেন্টমার্টিনে খাবার সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন