১৭ মাসে গড়ানো ভয়াবহ ইউক্রেন যুদ্ধ এতদিন সীমাবদ্ধ ছিল কিয়েভের মাটিতেই। কিন্তু পাল্টা হামলার মাধ্যমে যুদ্ধটা এখন রাশিয়ায় ঢুকছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার (৩০ জুলাই) পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক থেকে একটি ভিডিও বার্তায় এ দাবি করেন তিনি। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
আরও পড়ুন : সুইডেনের সাঁজোয়া যান ধরে ফেলল রুশ বাহিনী
ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধ এখন রাশিয়ায় ঢুকছে। দুই দেশের মধ্যে চলমান এ যুদ্ধে রুশ সীমান্তে হামলা ছিল অবশ্যম্ভাবী। এটি স্বাভাবিক ও ন্যায়সংগত। ইউক্রেন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। আজ কথিত বিশেষ সামরিক অভিযানের ৫২২তম দিন। অথচ মস্কো ভেবেছিল, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটা শেষ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন : আফ্রিকার ৬ দেশে বিনামূল্যে গম দেবেন পুতিন
এদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল রোববার ইউক্রেনের তিনটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে তারা। দুটি ড্রোন অফিস ভবনে বিধ্বস্ত হয়েছে। এ হামলার কারণে মস্কোর কেন্দ্রস্থল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমের ভনুকোভো বিমানবন্দর ঘণ্টাখানেকের জন্য বন্ধ রাখা হয়। এদিন ভোরের দিকের ওই হামলার আগেও বেশ কয়েক দফায় রাশিয়ার ভেতরে হামলা হয়েছে। মস্কো সেসব হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করলেও তারা দায় স্বীকার করেনি।
আরও পড়ুন : লেবাননে ফিলিস্তিনি শিবিরে সংঘর্ষ, ফাতাহ কমান্ডারসহ নিহত ৬
এর আগে, যুদ্ধ বন্ধে আফ্রিকান নেতারা যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, তা শান্তির ভিত্তি হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে কিয়েভের হামলার জেরে ওই উদ্যোগ বাস্তায়ন কঠিন হবে বলেও জানান তিনি। সেন্ট পিটার্সবার্গে রাশিয়া-আফ্রিকা সম্মেলনের পর শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ বন্ধে বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছেন আফ্রিকান নেতারা। এর মধ্যে রয়েছে- ইউক্রেনীয় ভূমি থেকে রুশ সৈন্য প্রত্যাহার, বেলারুশ থেকে রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র অপসারণ, পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসি’র গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করা এবং মস্কোর ওপর আরোপ করা সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। এই বিষয়গুলো ছাড়া প্রস্তাবের বাকি অংশ প্রকাশ করা হয়নি।
দুই দিনের রাশিয়া-আফ্রিকা সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন গেল শুক্রবার সেন্ট পিটার্সবার্গে আফ্রিকান নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পুতিন। সেসময় আফ্রিকান নেতারা তাদের এই পরিকল্পনা নিয়ে মস্কোকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে ইউক্রেন এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতির পক্ষে নয়, সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার যুক্তি- এখন যুদ্ধবিরতির মানে দেশের প্রায় একপঞ্চমাংশের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেওয়া এবং রুশ বাহিনীকে পুনরায় সংগঠিত হতে সময় দেওয়া।
মন্তব্য করুন