যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের ওপর আরও চাপ দিয়ে বলেছেন, যেন তারা রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করার চুক্তি মেনে নেয়। তিনি দাবি করেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চাইলেই প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকের আগে মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেন, যে কোনো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে হলে রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রিমিয়াকে (ইউক্রেনের কাছে) ফিরিয়ে আনা বা ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি বাদ দিতে হবে।
ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে রোববার বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যদি চান, তাহলে প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করতে পারেন, অথবা তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেন। মনে রাখবেন, কীভাবে সব শুরু হয়েছিল—ক্রিমিয়া ফিরে পাওয়া যায়নি, ন্যাটোতেও যোগ দেওয়া যায়নি। কিছু বিষয় কখনো পরিবর্তন হয় না।
আলজাজিরা বলছে, ট্রাম্পের এ মন্তব্যের মধ্যেই ইউরোপীয় নেতারা জেলেনস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, কারণ ব্রাসেলস ও কিয়েভের আশঙ্কা, ট্রাম্প এমন কোনো সমঝোতা স্বাক্ষর করতে পারেন যা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে অত্যধিক সুবিধাজনক হতে পারে।
ট্রাম্পের মন্তব্যের কিছুক্ষণ পর জেলেনস্কি বললেন, পূর্বে ক্রিমিয়াসহ কিছু ক্ষেত্রে পুতিনের কাছে ইউক্রেনের ছাড় দেওয়ায় তাকে আরও বেশি আক্রমণ চালাতে উৎসাহিত করেছে।
তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, আমরা সবাই চাই এই যুদ্ধ দ্রুত ও নির্ভরযোগ্যভাবে শেষ হোক এবং শান্তি স্থায়ী হোক। তবে কয়েক বছর আগের মতো নয় যখন ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া ও পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশ (ডনবাস) ছাড়তে হয়েছিল এবং পুতিন তা ব্যবহার করেছিল নতুন আক্রমণের জন্য। ১৯৯৪ সালের নিরাপত্তা নিশ্চয়তাও কাজ করেনি।
আরও পড়ুন: ভালো স্বামী বানাতে খোলা হলো বিশেষ স্কুল, যা শেখানো হয়
জেলেনস্কি আরও বলেন, ক্রিমিয়া তখন ছাড়ানো উচিত ছিল না, যেমন ২০২২ সালের পরও ইউক্রেনীয়রা কিয়েভ, ওডেসা বা খারকিভ ছাড়েনি। ইউক্রেনীয়রা তাদের ভূমি ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছেন।
যদিও ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে কিছু ভূখণ্ড বিনিময়ের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, তবে জেলেনস্কি বারবার নিশ্চিত করেছেন যে, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখলকারীর হাতে দেওয়া হবে না।
ইউরোপীয় নেতারা, যাদের মধ্যে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্জ ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ সোমবারের হোয়াইট হাউস বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। ট্রাম্পকে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন বজায় রাখার জন্য চাপ দিতেই এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন তারা।
মন্তব্য করুন