রাশিয়ার নতুন অস্ত্রে অসুস্থ হয়ে পড়ছে ইউক্রেনীয় সেনারা। ওই অস্ত্রের হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া দুজন ইউক্রেনীয় সৈন্য মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এতে উঠে আসে ভয়াবহ এক অস্ত্রের তথ্য।
ওই সৈনিকরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের মুখে এবং গলার ভেতরে পোড়া ক্ষত তৈরিসহ নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে গোটা ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যেই এক ধরনের ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।
সিএনএন জানিয়েছে, চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রাণঘাতি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা।
দেশটি বলছে, ইউক্রেনের সেনাদের বিরুদ্ধে শ্বাসরোধকারী এজেন্ট ক্লোরোপিক্রিন গ্যাস ব্যবহার করছে মস্কো। যুদ্ধক্ষেত্রে কৌশল হিসেবে এ কাজ করছে রুশ সেনারা। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
এর আগে বুধবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিরুদ্ধে শ্বাসরোধকারী এজেন্ট ক্লোরোপিক্রিন গ্যাস এবং টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করছে রাশিয়া, যা আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের সমতুল্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধক্ষেত্রে এই ধরনের রাসায়নিক বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। রুশ সেনারা সুরক্ষিত অবস্থান থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের সরিয়ে দিতে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে কৌশলগত জয় পেতে এই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে।
এই গ্যাসের প্রভাবে ফুসফুস, চোখে এবং ত্বকে জ্বালাতন শুরু হয়, সরাসরি সংস্পর্শ হলে সপ্তাহ ধরে বমি এবং ডায়রিয়া হতে পারে। ক্লোরোপিক্রিন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। বর্তমানে এর সামরিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলেও কৃষিকাজে ব্যবহার রয়েছে।
গত মার্চে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানায় যে, তারা এক হাজারেরও বেশি হামলার ঘটনা রেকর্ড করেছে, যেখানে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে তৈরি টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারি মাসেই এরকম ২৫০টি ঘটনা ঘটেছে।
তারা আরও জানিয়েছে, অন্তত ৫০০ ইউক্রেনীয় সৈন্যকে বিষাক্ত রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসার জন্য চিকিৎসা করা হয়েছে এবং একজন টিয়ার গ্যাসে শ্বাসরোধ হয়ে মারা গেছে। তবে অনেক আগে থেকেই যুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়া।
এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের রুশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি তারা। গেল জানুয়ারিতে নেদারল্যান্ডসের রুশ দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছিল, আন্তর্জাতিক তদন্তকারীরা নিশ্চিত করেছে রুশ সেনাবাহিনীর মজুতে কোনো রাসায়নিক অস্ত্র নেই।
মন্তব্য করুন