কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বিয়েতে বাধ্য করা হয় যেখানে

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

সরকারি চাকরি পাওয়ার পর যুবকের জীবন বদলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন ভয়ে ঘর থেকেই বের হচ্ছেন না তিনি। উঁকি-ঝুঁকি মেরে দেখছেন, বাইরে অপরিচিত গাড়ি বা মানুষ আছেন কিনা। তাকে জোর করে ধরে নিয়ে বিয়ে করিয়ে দেওয়া হতে পারে, ঘিরে ধরেছে এমন ভয়। তুলে নিয়ে গিয়ে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বিয়ের ঘটনা শুনতে অবাক করা মনে হলেও ভারতের বিহারে এটাই যেন স্বাভাবিক।

জোরপূর্বক এমন বিয়েকে পাকাদুয়া বিয়ে বা শটগান বিয়েও বলে। যেখানে বরকে অপহরণ করে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বিয়ে করিয়ে দেওয়া হয়। বিহারে এই সংকটের মূলে রয়েছে কুখ্যাত যৌতুক প্রথা। বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ার আগেই বরপক্ষ যৌতুক দাবি করে বসে এ রাজ্যে। তখন নিরুপায় হয়ে যায় কনেপক্ষ। তাই ভারতের অন্যতম গরিব এই রাজ্যে পাকাদুয়া বিয়ের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।

১৯৭০-র দশকে প্রথম শটগান বিয়ের ব্যাপক উত্থান ঘটে। ওই সময় যৌতুক ও বেকারত্বের সমস্যা প্রকট হয়। তাই চাকরিজীবী পাত্রের চাহিদা বেড়ে যায় বহু গুণ। ১৯৮০-র দশকে বিহারে পাকাদুয়া বিয়ের ঘটনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এই ধারা ২০০০-র দশকেও চলমান থাকে। তবে ২০০৯ সালের পর হঠাৎ কমে যায় পাকাদুয়া বিয়ে। কিন্তু সম্প্রতি পাকাদুয়া বিয়ে আবারও ফিরে এসেছে এবং এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।

পাকাদুয়া বিয়ের ভয়ে অনেকেই বাস করছেন ভিন্ন শহরে। রাজ্য সরকারের অপরাধের রেকর্ডও বলছে, সেখানে জোরপূর্বক বিয়ে বেড়েছে বহু গুণ। কিন্তু বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ। রাজ্য পুলিশেরই একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভাষায়, প্রতি ৪টি ঘটনার মধ্যে মাত্র একটি লিপিবদ্ধ করা হয়। সম্প্রতি সরকারি চাকরির প্রতি যুবকদের ঝোঁক বাড়ায়, এ ধরনের অপরাধও বেড়েছে।

বেকারত্বের সংকট জোরপূর্বক এই বিয়ের মূল কারণ। ভারতে বেকারত্বের জাতীয় গড় ১০ শতাংশ হলেও বিহারে ১৫-২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে তা ১৩.৯ শতাংশ। তাই সরকারি চাকরিজীবী যুবক পাত্রীর পরিবারের কাছে সোনার হরিণ। এই অপহরণ চক্র চাকরির কোচিংগুলোর কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে। চাকরি ভেদে পাত্রের দামও নির্ধারিত রয়েছে। কনেপক্ষ চাইলে মাসিক কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পুরো প্রক্রিয়াকে আনজাম দিতে জেলাজুড়ে সেফ হাউস, আইনজীবী এমনকি স্থানীয় ফটোগ্রাফারও রয়েছে এই চক্রের। অপহরণের আগে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলে পরিকল্পনা। আবার কিছু কিছু গ্যাং আছে, যাদের প্যাকেজে সুরক্ষা সার্ভিস, আইনি নথিকরণ এবং অনিচ্ছুক বরকে বোঝানোর জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।

সূত্র : টাইমস নাউ

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিরপুরে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে অনুশীলনে আফিফরা

বিএনপি নেতা রফিকুল আলম মজনুর উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ

আড়াই মাস পর ওবাইদুরের লাশ ফেরত দিল ভারত

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াবে লিটন, বিশ্বাস সিমন্সের

‘সোহাগ হত্যার ভিডিও না আসা পর্যন্ত সরকার কী করল’

ইউনিয়ন বিএনপি নেতার পায়ুপথ থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার

মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর

শিক্ষকের অনৈতিক প্রস্তাব-হুমকি, শরীরে আগুন দিলেন ছাত্রী

সকাল ৯টার মধ্যে ৮ বিভাগে ঝড়বৃষ্টির আভাস

আজই মা হতে পারেন কিয়ারা

১০

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের সম্প্রচার স্বত্ব বেচাকেনায় চমক

১১

শাহবাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মশাল মিছিল

১২

ভারতে পালাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আটক

১৩

ব্যবসায়ীর গলায় ছুরি ধরে চাঁদা দাবি

১৪

‘চাঁদাবাজদের নিপীড়ন মুখ বুঝে সহ্য করবে না জনগণ’

১৫

সোহাগ হত্যা / ক্ষোভ ঝাড়লেন মামুনুল হক

১৬

হাসিনা আমলের মতো নৃশংস আচরণ করবেন না : মঞ্জু

১৭

বিএনপিকে জিয়ার আদর্শে ফিরতে হবে : হেফাজতে ইসলাম

১৮

আওয়ামী জাহেলিয়াতের লগি-বৈঠাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে : রাশেদ প্রধান

১৯

লর্ডসে ইতিহাস গড়লেন ঋষভ পন্ত

২০
X