ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে এবার মুখ খুললেন জনপ্রিয় মুসলিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ভয়াবহ এই হামলাকে ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতার’ ফলাফল বলে অভিহিত করেছেন তিনি। একইসঙ্গে এই হামলার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রতি জবাবদিহিতা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লোকসভার এ আইন প্রণেতা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) সভাপতি ওয়াইসি বলেছেন, নিরীহ পর্যটকদের ওপর নির্মম এই সন্ত্রাসী হামলা পুলওয়ামা ও উরি হামলার চেয়েও বেশি বেদনাদায়ক এবং নিন্দনীয়।
হায়দ্রাবাদে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে এআইএমআইএম প্রধান বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা পেহেলগামে নির্দোষ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে, তাদের ধর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে হত্যা করেছে। এটি একটি বেদনাদায়ক ঘটনা এবং গণহত্যা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আশা করি সরকার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’
ওয়াইসি বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীরের বিরুদ্ধে কেন্দ্র যে প্রতিরোধের নীতি গ্রহণ করেছে তা কার্যকর কিনা সেটি সরকারকে মূল্যায়ন করতে হবে। এটি একটি গোয়েন্দা ব্যর্থতা। সরকারকে তার প্রতিরোধ নীতি সফল কিনা তা বিশ্লেষণ করতে হবে। জবাবদিহিতা নির্ধারণ করতে হবে।’
ওয়াইসি এই ধরনের সহিংসতার মাধ্যমে কাশ্মীরের পর্যটনশিল্পের ক্ষতি করার প্রচেষ্টা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকেলে পহেলগামের বৈসরান উপত্যকার একটি প্রধান পর্যটনকেন্দ্রে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। উপত্যকাটি একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত, যাকে অনেকে ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে অবিহিত করেন। পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো ওই হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন নিহত এবং প্রায় ১৭ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক রয়েছে বলে জানা গেছে।
হামলায় বেঁচে যাওয়া পর্যটকদের মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঘাসের চাদরের ওপর অনেকগুলো মৃতদেহ পড়ে আছে, মানুষ কাঁদছে এবং সাহায্যের জন্য আবেদন করছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ২০০৮ সালের মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলায় ১৬০ জনেরও বেশি লোক নিহত হওয়ার পর এটি ছিল ভারতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ আক্রমণ। হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে বুধবার সকালেই ভারতে ফিরে আসেন।
মন্তব্য করুন