কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫, ০৫:১৩ পিএম
আপডেট : ০৪ মে ২০২৫, ০৬:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পাকিস্তানি নারীকে বিয়ে ভারতীয় জওয়ানের, অতঃপর…

সিআরপিএফ জওয়ান মুনির আহমেদ ও তার স্ত্রী মিলান খান। ছবি : সংগৃহীত
সিআরপিএফ জওয়ান মুনির আহমেদ ও তার স্ত্রী মিলান খান। ছবি : সংগৃহীত

প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত এবং পাকিস্তানে এক দেশ থেকে অন্য দেশে বিয়ের মতো পারিবারিক বন্ধনের বেশ প্রচলন রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে এই আনন্দঘন বিষয়টিও বেশ বিড়ম্বনার কারণ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি পাকিস্তানি এক নারীকে বিয়ে করার কারণে চাকরি হারিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) এক সদস্য।

সিআরপিএফ জওয়ান মুনির আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাকিস্তানি নারীকে বিয়ে করার পর সেই তথ্য গোপন করেছেন তিনি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মুনির আহমেদ দাবি করেছেন, তিনি কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেননি। অনুমতি নেওয়ার পরই বিয়ে সম্পন্ন করেন।

রোববার (৪ মে) হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুনির আহমেদ ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে সিআরপিএফে যোগ দেন। এরপর তিনি পাকিস্তানের নাগরিক মিনাল খানকে বিয়ে করেন, কিন্তু সেই বিয়ের তথ্য তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন রাখেন বলে অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, অভিযোগে বলা হয়েছে, মিনাল খানের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তিনি তাকে নিজের বাসভবনে রেখেছিলেন।

ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার মতে, এটি একটি গুরুতর অপরাধ এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ নিরাপত্তা বাহিনী সিআরপিএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত গুরুতর উদ্বেগের কারণে।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুনির আহমেদ। তার দাবি, তিনি নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের আগে সদর দফতর থেকে লিখিত অনুমতি নিয়েছিলেন এবং সেই অনুমতির ভিত্তিতেই বিয়ে সম্পন্ন করেন। তার ভাষায়, ‘আমি কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করিনি। অনুমতি নেওয়ার পরই আমি মিনালকে বিয়ে করি।’

তিনি আরও জানান, বরখাস্তের বিষয়ে প্রথমে তিনি গণমাধ্যমের মাধ্যমেই জানতে পারেন। পরে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠির মাধ্যমে সিআরপিএফ তাকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। মুনির বলেন, ‘এটি আমার এবং আমার পরিবারের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক ঘটনা। আমি নিজের পেশা ও কর্তব্য সম্পর্কে সর্বদা সচেতন ছিলাম এবং কোনো অবৈধ কাজ করিনি।’

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যদি মুনির আহমেদ সত্যিই পূর্বে অনুমতি নিয়ে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে এই ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হলো।

মুনির আহমেদ এখন তার বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে আইনি চ্যালেঞ্জ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার আইনজীবীদের মতে, তিনি সমস্ত বিধিবদ্ধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ অনৈতিক ও অন্যায়।

প্রসঙ্গত, এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে। ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কও বর্তমানে উত্তেজনাপূর্ণ।

এই প্রেক্ষাপটে মুনির আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং তার বরখাস্তের ঘটনাকে অনেকেই শুধু একটি ব্যক্তি পর্যায়ের বিষয় হিসেবে দেখছেন না, বরং এটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত বাস্তবতার প্রতিফলন বলেও মনে করছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজধানীতে ককটেল বিস্ফোরণ

থানায় ককটেল নিক্ষেপ, ৩ পুলিশ আহত

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের আগে মধ্যরাতে হামজার পোস্ট

‘আই ডোন্ট কেয়ার’ লেখা ফটোকার্ড পোস্ট, ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে থানায় সোপর্দ

ইতালিতে শীতকালীন পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ভুক্তভোগীদের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’: জাতিসংঘ

২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত যে ৩২ দলের

‘হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেদিন কার্যকর হবে, সেদিন আমি আনন্দিত হবো’

সাবেক এমপি হারুনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের

সড়ক অবরোধের অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক

১০

দণ্ডিতদের বক্তব্য প্রচার না করার অনুরোধ সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির

১১

আফগানিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ

১২

রায়ে ‘ন্যায় বিচার’ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে : বিএনপি

১৩

বর্ষসেরা ফুটবলারের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ, আছেন যারা

১৪

শেখ হাসিনার মামলার পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ কী

১৫

গাজীপুর জেলা কারাগারে হাজতির মৃত্যু

১৬

ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় মা-ছেলেকে পেটাল গ্রাম পুলিশ

১৭

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মতিউর রহমান মারা গেছেন

১৮

নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত সংকট দূর হবে না : কফিল উদ্দিন

১৯

পটুয়াখালীতে বিএনপির প্রস্তাবিত নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগ

২০
X