গণহারে হাজার হাজার এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে ভারত। এতে বাদ যায়নি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের অ্যাকাউন্টও। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ২ হাজার ৩০০-এর বেশি এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুটি অ্যাকাউন্টও রয়েছে। এ ঘটনায় সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স।
রোববার ভারতে রয়টার্স নিউজ ও রয়টার্স ওয়াল্ড অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালু করে। এর আগে শনিবার অ্যাকাউন্ট দুটি সাময়িক স্থগিত করা হয়েছিল। ভারত সরকারের একটি আইনি নির্দেশনার কারণে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার এক পোস্টে এক্স জানায়, ৩ জুলাই ভারতের ইলেকট্রনিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় তাদের ২ হাজার ৩৫৫টি অ্যাকাউন্ট ব্লক করার নির্দেশ দেয়। এক ঘণ্টার মধ্যে এটি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, যদি নির্দেশ অমান্য করতাম, তাহলে ফৌজদারি দায়ভার আসত। কোনো যৌক্তিকতা না দেখিয়েই বলা হয়, অ্যাকাউন্টগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্লক রাখতে। পরে জনরোষের মুখে সরকার রয়টার্স ও রয়টার্স ওয়ার্ল্ড অ্যাকাউন্ট দুটি আনব্লক করার অনুরোধ জানায়।
ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এএনআইকে জানিয়েছেন, সরকার ৩ জুলাই কোনো নতুন ব্লকিং নির্দেশ দেয়নি এবং আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদমাধ্যম বন্ধ করার ইচ্ছাও তাদের ছিল না। মুখপাত্র দাবি করেন, এক্স অ্যাকাউন্টগুলো খুলতে দেরি করেছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতে মতপ্রকাশ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে। সরকার প্রায়ই অস্থিরতার সময় ইন্টারনেট বন্ধ রাখে।
গত এপ্রিলে ভারত পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে ডজনখানেক চ্যানেল বন্ধ করেছিল, যদিও পরে অনেকগুলোই খুলে দেওয়া হয়। এর আগে মণিপুরে ২০২৩ সাল থেকে জাতিগত সহিংসতার প্রেক্ষাপটে মাঝেমধ্যে ইন্টারনেট বন্ধও রাখা হচ্ছে।
সরকার বলছে, গুজব ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো ঠেকাতেই এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এক্স জানিয়েছে, তারা আইনি পথে সব বিকল্প বিবেচনা করছে। তবে ভারতীয় আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে তারা নিজেরা মামলা করতে পারছে না। সংস্থাটি জানিয়েছে, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবহারকারীদের আদালতের মাধ্যমে আইনি প্রতিকার চাওয়ার আহ্বান জানাই।
মন্তব্য করুন