যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের একটি খুচরা পণ্যের দোকান থেকে প্রায় ১,৩০০ ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দেড় লাখ টাকা) পণ্য চুরির অভিযোগে তদন্তের মুখে পড়েছেন এক ভারতীয় নারী। দোকানে সাত ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘোরাঘুরি করার পর তিনি কোনো অর্থ পরিশোধ না করেই বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এমন অভিযোগে তাকে আটক করে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে একটি ‘টার্গেট’ নামে পরিচিত খুচরা বিক্রেতা চেইনের স্টোরে। বুধবার (১৬ জুলাই) এনডিটিভি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওই নারী পর্যটক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন এবং ঘটনাটির একটি ভিডিও ইতোমধ্যে ইউটিউবে প্রকাশিত হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
পুলিশের বডিক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, টার্গেট স্টোরের এক কর্মী জানান, ওই নারী দীর্ঘ সময় ধরে দোকানে ঘুরছিলেন, বিভিন্ন পণ্য শেলফ থেকে নিচ্ছিলেন, ফোনে কারও সঙ্গে পরামর্শ করছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো পেমেন্ট না করেই দোকানটির পশ্চিম দিকের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ওই নারী নিজের ভুল বুঝতে পেরে পণ্যের দাম পরিশোধের প্রস্তাব দেন এবং বলেন, ‘আমি দুঃখিত, যদি আপনাদের বিরক্ত করে থাকি। আমি এই দেশের নাগরিক নই এবং এখানে স্থায়ীভাবে থাকব না।’
জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা প্রশ্ন করেন, ‘আপনার দেশে—ভারতে কি জিনিস চুরি বৈধ?’
পরে পুলিশের পক্ষ থেকে বিল যাচাই করে কাগজপত্র প্রস্তুত করা হয় এবং ওই নারীকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ফেলোনি (গুরুতর অপরাধ) অভিযোগ আনার প্রক্রিয়া চলছে, যদিও এখনো তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
ঘটনার ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশের পর দ্রুত তা ভাইরাল হয়ে পড়ে। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়, ২০২৫ সালের ১ মে, এক নারী ঘণ্টার পর ঘণ্টা দোকানে ঘোরাঘুরি করে হাজার ডলারের পণ্য চুরি করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে।
অনলাইনে এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয় বিতর্ক এবং ক্ষোভ। একজন মন্তব্য করেন, ‘আমি নিজেও অভিবাসী। কোনো বিদেশি দেশে গিয়ে এ ধরনের কাজ করার সাহস কেউ পায়— এটা ভাবাই যায় না।’
আরেকজন লেখেন, ‘ভাষা বা সংস্কৃতির কোনো ভুল বোঝাবুঝি এখানে ছিল না। সে জানত সে কী করছে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করল!’
একজন অভিবাসী ব্রিটিশ নাগরিক মন্তব্য করেন, ‘আমি যুক্তরাজ্যে সাত বছরের বেশি সময় ধরে বৈধভাবে আছি। সবসময় চেষ্টা করেছি স্থানীয়দের শ্রদ্ধা করতে এবং আইন মানতে। একজন অভিবাসী হিসেবে আপনি শুধু নিজের নয়, দেশেরও প্রতিনিধি।’
এদিকে, টার্গেট কর্তৃপক্ষ কিংবা স্থানীয় পুলিশ বিভাগ থেকে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
মন্তব্য করুন