কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৭ পিএম
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২:৫২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এক বছরের শিশুর কামড়ে কোবরার মৃত্যু!

নানির কোলে গোবিন্দ। ছবি : সংগৃহীত
নানির কোলে গোবিন্দ। ছবি : সংগৃহীত

বর্ষাকালে সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যুর খবর নতুন নয়। তবে এক বছরের শিশুর কামড়ে যদি একটি কোবরা সাপ মারা যায়—তবে তা নিঃসন্দেহে চমকে যাওয়ার মতো ঘটনা। ঠিক এমনই অদ্ভুত একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যের পশ্চিম চম্পারন জেলার একটি গ্রামে।

গ্রামের নাম মোহছি বনকাটোয়া। সেখানকার বাসিন্দা গোবিন্দ নামের এক বছরের একটি শিশু খেলছিল তার বাড়ির পাশে, আর তার মা বাড়ির পেছনে চুলা জ্বালানোর কাঠ গোছাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি সাপ বেরিয়ে আসে। শিশুটি সাপটিকে দেখে ভয় না পেয়ে উল্টো সেটিকে ধরে কামড় দেয়। এতে সাপটির মৃত্যু হয়। গত বৃহস্পতিবারের (২৪ জুলাই) এ ঘটনার ফলে খবরের শিরোনামে চলে এসেছে শিশুটি।

গোবিন্দর নানি মতিসারি দেবী বলেন, আমরা তখনই খেয়াল করি যে, এটা একটা গেহুঁওন সাপ, যাকে স্থানীয়ভাবে কোবরা বলা হয়। সাপটিকে কামড় দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই গোবিন্দ অজ্ঞান হয়ে যায়।

তাকে তড়িঘড়ি করে মঞ্ঝোলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে বেতিয়া সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসা শেষে সে এখন পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে।

শিশুটির চিকিৎসক ডা. কুমার সৌরভ জানান, ভর্তির সময় তার মুখের চারপাশ কিছুটা ফুলে গিয়েছিল। পরিবারের লোকজন জানান, সাপের মুখে কামড় দিয়েছিল সে, এমনকি হয়তো সাপের দেহের কিছু অংশ খেয়েও ফেলেছিল।

ডা. সৌরভ আরও বলেন, সাপ মানুষকে কামড়ালে তার বিষ রক্তে মিশে গিয়ে স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত হানে, যা মারাত্মক হতে পারে। কিন্তু মানুষ যদি সাপকে কামড়ায়, তাহলে সেই বিষ মুখ হয়ে পেটে গিয়ে হজম হয়ে যায় এবং শরীর সেটিকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। তবে যদি কারও খাদ্যনালিতে ক্ষত বা আলসার থাকে, তাহলে সেই বিষ রক্তে মিশে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

এদিকে এ ঘটনা গ্রামবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় সাংবাদিক নেওয়াজ জানান, শ্রাবণ মাসে আমাদের এলাকায় সাপ বের হওয়া খুবই সাধারণ বিষয়; কিন্তু একটি শিশুর হাতে সাপ মারা যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ সাপের কামড়ে মারা যান। এর মধ্যে শুধু ভারতে মারা যায় প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ। এজন্যই ভারতকে বলা হয় ‘সর্প-দংশনের রাজধানী’।

বিহার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত বিহারে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ৯৩৪ জনের। একই সময়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে প্রায় ১৭ হাজার ৮৫৯ জন।

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেকেই সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না। ভারতে সাপে কাটা মৃত্যুর ৭০ শতাংশই ঘটে বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান এবং গুজরাটে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যায়যায়দিনের প্রকাশক সাঈদ হোসেন চৌধুরী স্মরণে দোয়া মাহফিল

ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে হঠাৎ ফায়ার অ্যালার্ম, তদন্ত কমিটি গঠন

পেহেলগাম হামলার মূল অভিযুক্তসহ ৩ জনকে হত্যার দাবি ভারতের

অবশেষে জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ

চট্টগ্রামে মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বে খুন, অস্ত্র উদ্ধার

চাঁদাবাজকে ধরে গণধোলাই দিল জনতা

১২ হাজার নিম্ন আয়ের মানুষকে দক্ষতা প্রশিক্ষণ দিবে পিকেএসএফ

মালয়েশিয়ায় ১৫ বাংলাদেশি আটক

সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক কর্মকর্তার কারাদণ্ড

শিক্ষার মানোন্নয়নে অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে : গণশিক্ষা উপদেষ্টা

১০

কক্সবাজার সৈকতে স্ত্রীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, স্বামী গ্রেপ্তার

১১

ইউজিসির হিট প্রকল্পের গবেষণা ফান্ড থেকে বঞ্চিত জবি

১২

প্রেমের টানে ইরানে গিয়ে যেভাবে বেঁচে ফেরেন মার্কিন নাগরিক

১৩

বিয়ামে আগুন / নথি পোড়াতে গিয়ে অফিস সহায়ক ও গাড়িচালক নিজেরাই মারা যান

১৪

১৪ ফেক আইডির নামে ছাত্রদল নেতার জিডি

১৫

স্কুলে শনিবারের ছুটি বাতিল করা হয়নি : মাউশি

১৬

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা

১৭

গ্যাস লিকেজে দগ্ধ স্বামী-স্ত্রী, আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি

১৮

বিয়ে বাড়িতে ডাকাতির অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

১৯

জিয়াউর রহমান সাড়ে ৩ বছরে দেশে আমূল পরিবর্তন করেছিলেন : ডা. ডোনার

২০
X