কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ভারতে ২০০ লোকের ধর্ষণের শিকার বাংলাদেশি কিশোরী উদ্ধারে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য

ছবি : প্রতীকী
ছবি : প্রতীকী

পরিবারের সঙ্গে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে ভারতে পাচারের শিকার হয়েছিল ১২ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি কিশোরী। ভারতের মহারাষ্ট্রে মাত্র তিন মাসের মধ্যে অন্তত ২০০ পুরুষ তাকে ধর্ষণ করে। মহারাষ্ট্রের ভাসাই বিহারের মীরা-ভায়ন্দর পুলিশের যৌথ অভিযানে নইগাঁওয়ের একটি ফ্ল্যাট থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া, নারী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ফ্ল্যাট থেকে মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জানা যায়, উদ্ধার হওয়া ওই কিশোরীকে জুভেনাইল ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শিশুটিকে বাংলাদেশ থেকে গুজরাটের নাদিয়াদে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার ওপর যৌন নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। বিজয় কদম নামে নওগাঁও থানার এক তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতে নিয়ে আসার পর শিশুটির পরিচিত এক নারী তাকে বিক্রি করে দেন। শিশুটিকে এরপর পতিতাবৃত্তিতে ঠেলে দেয়া হয়। তার পর থেকে তাকে নানা জায়গায় পাচার করা হয়। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, গত তিন মাস ধরে তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাকে ২০০ জনের বেশি লোক ধর্ষণ করে। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী এক কর্মকর্তা।

উদ্ধারকৃত কিশোরী জানায়, বাবা-মায়ের বকুনির ভয়ে সে তার পরিচিত এক মহিলার সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল। ওই মহিলাটি তাকে লুকিয়ে সীমান্ত পার করে ভারতে নিয়ে আসে এবং তাকে পতিতাবৃত্তি চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয়।

সীমান্ত পার করার পরে তাকে প্রথমে কলকাতায় পাচার করা হয়েছিল। সেখানে তার একটি জাল আধার কার্ড তৈরি করা হয়েছিল। তার পরে তাকে মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে তাকে নইগাঁওয়ের একটি বাড়িতে বন্দি রাখা হয়েছিল।

সেই বাড়িতে থাকত এক বৃদ্ধ এবং তার স্ত্রী। ওই মেয়েটি ছাড়াও সেখানে আরও ৭-৮ জন মেয়ে ছিল। একদিন ওই বৃদ্ধ বাংলাদেশি মেয়েটিকে একটি ইনজেকশন দেয়। যার ফলে তার বাধাদানের ক্ষমতা চলে গিয়েছিল। ওই অবস্থায় তাকে ধর্ষণ করে ওই বৃদ্ধ। তার পর থেকে তাকে একের পর এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়।

হারমনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান আব্রাহাম মাথাই বলেছেন, মেয়েটি এখনও কৈশোরে পা রাখেনি, অথচ কিছু নৃশংস মানুষ তার শৈশব কেড়ে নিয়েছে।

তবে এই মেয়েটির ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভাশি এবং বেলাপুরে আমি অনেক নাবালিকাকে ভিক্ষা করতে দেখেছি। তাদের অনেককে শিশু অবস্থায় চুরি করে গ্রাম থেকে শহরে আনা হয় এবং শোষণ করা হয়। এক বা দু’জন বয়স্ক মহিলা তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। তারা ওই শিশুদের দেহব্যবসায় জড়িয়ে পড়তে বাধ্য করে। এমনকি যাদের বয়স খুব কম থাকে, তাদের হরমোনের ইনজেকশন দিয়ে পতিতাবৃত্তিতে নামানো হয়।’

বাবা-মায়েদেরও তিনি সতর্ক করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সৎ উদ্দেশ্য থাকলেও বাবা-মায়ের খুব কঠোর হওয়া উচিত নয়। এতে শিশুরা তাদের থেকে দূরে সরে যায়।

পুলিশ কমিশনার নিকেত কৌশিক বলেন, এমবিভিভি পুলিশ পুরো নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কিশোর-কিশোরীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ও চক্রের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শাটডাউন এড়াতে মার্কিন কংগ্রেসে বিল পাস

১৩ নভেম্বর : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

জালনোটসহ তিন কিশোর আটক

ঢাকায় শীত অনুভব, সকালে তাপমাত্রা নেমে ১৯ ডিগ্রিতে

চলতি বছর ভূমধ্যসাগরে রেকর্ড অভিবাসীর মৃত্যু

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

গভীর রাতে চলন্ত বাসে আগুন

বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে চাই : মান্না

১০

মোটরসাইকেলে এসে আগুন দিয়ে পালাল দুর্বৃত্তরা

১১

জামালপুরে একাধিক পয়েন্টে চেকপোস্ট

১২

পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

১৩

ইভ্যালির রাসেলের কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড

১৪

সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ আটক ৪

১৫

ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার

১৬

আ.লীগ নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পড়ে ছিল ৯ রাউন্ড গুলির খোসা

১৭

উত্তরায় যুব-স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের অবস্থান

১৮

জবি ছাত্রী হলে ছাত্রদলের উপহার সামগ্রী বিতরণ

১৯

চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ার অঙ্গীকার কফিল উদ্দিনের

২০
X