ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান হামলা-পাল্টা হামলার মাঝে পাকিস্তান ইরানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি, বিশ্বের সব মুসলিম দেশকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
শনিবার (১৪ জুন) পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বক্তব্য রাখার সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, আমরা ইরানের পাশে আছি এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমর্থন জানাব।
তিনি আরও জানান, ইসরায়েল ইরান, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনকে লক্ষ্যবস্তু করে আক্রমণ চালাচ্ছে। মুসলিম দেশগুলো যদি এখন ঐক্যবদ্ধ না হয়, তাহলে প্রত্যেককেই একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুসলিম দেশগুলোর প্রতি অবিলম্বে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি, তিনি ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কে জরুরি বৈঠকে বসে ইসরায়েল ইস্যুতে একটি যৌথ কৌশল নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছেন।
খাজা আসিফ আরও বলেন, ইরানের সঙ্গে পাকিস্তানের গভীর সম্পর্ক রয়েছে এবং ইসলামাবাদ এই সংকটময় সময়ে তেহরানের পাশে দাঁড়িয়েছে।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ইরানি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলাকে ‘ইরানের সার্বভৌমত্বের নগ্ন লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যা দুই দেশের ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কের গুরুত্বকে আরও বৃদ্ধি করে।
শুক্রবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তেহরানের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যেখানে প্রায় ১০০ বেসামরিক নাগরিক, সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।
জবাবে ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক স্থাপনায় পাঁচ ধাপে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইরানের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তাদের হামলায় ইসরায়েলের ১৫০টিরও বেশি সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শনিবারও ইরান দ্বিতীয় দিনের মতো কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী কয়েক ঘণ্টায় ইরানের পক্ষ থেকে আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হতে পারে।
এই অবস্থায় পাকিস্তান মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়ে একটি শক্তিশালী পন্থা গ্রহণের পক্ষপাতী।
মন্তব্য করুন