ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করার শঙ্কা নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেছেন, ইরানের জনগণ তেহরানের নেতৃত্বের ছায়াতলে একতাবদ্ধ হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাংবাদিকের প্রশ্নের সম্মুখীন হন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু খোলাখুলিভাবে অনুমান করেছেন, ইসরায়েলের সামরিক আক্রমণের ফলে ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন, আমেরিকা জানে খামেনি কোথায় ‘লুকিয়ে আছেন’ কিন্তু ওয়াশিংটন ‘আপাতত’ তাকে হত্যা করবে না।
ইসরায়েল যদি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় খামেনিকে হত্যা করে তবে তার প্রতিক্রিয়া কী হবে জানতে চাইলে পুতিন বলেন, ‘আমি এই সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতেও চাই না। আমি চাই না।’
চাপ দেওয়া হলে পুতিন বলেন, তিনি খামেনিকে হত্যা করার সম্ভাব্যতা সম্পর্কে মন্তব্য শুনেছেন কিন্তু তিনি এটি নিয়ে আলোচনা করতে চান না।
পুতিন উত্তর রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে সিনিয়র সংবাদ সংস্থার সম্পাদকদের বলেন, ‘আমরা আজ ইরানে দেখতে পাচ্ছি যে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়াগুলোর সব জটিলতা সত্ত্বেও... দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের চারপাশে সমাজের একত্রকরণ চলছে।’
পুতিন বলেন, সব পক্ষের উচিত এমনভাবে শত্রুতা বন্ধ করার উপায় খুঁজে বের করা যাতে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির অধিকার এবং ইসরায়েলের ইহুদি রাষ্ট্রের নিঃশর্ত নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত হয়।
ইরান-ইসরায়েলের হামলা পাল্টা-হামলা চলছে। ৭ দিনের এ সংঘাতে দুপক্ষই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। ইসরায়েল ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনাগুলোকে টার্গেট করছে। অন্যদিকে ইরানও ইসরায়েলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চালাচ্ছে পাল্টা হামলা। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইরানের পরমাণু প্রকল্পকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস।
খবর অনুযায়ী পুতিন বলেছেন, ‘ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো। তাই আমরা ইরানকে একটি প্রস্তাব দিয়েছি। যদি ইরান চায়, তাহলে রাশিয়া ইরানের পরমাণু প্রকল্পের কাজ নিজের তত্ত্বাবধানে চালাতে পারে। ইরানের ইউরেনিয়াম যাতে শুধু শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হয়, সে বিষয়েও রাশিয়া নজর রাখতে চায়। তবে এসব কিছুই হবে যদি ইরান রাজি হয়।’
তিনি আরও জানান, ইরানের বুশেহার শহরে দুটি পারমাণবিক চুল্লি তৈরি হচ্ছে। এ কাজের দায়িত্বে আছেন রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা। এ নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন পুতিন। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, বুশেহারের ওই এলাকা তারা আক্রমণ করবে না।
মন্তব্য করুন