কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ফিলিস্তিনিদের প্রতিক্রিয়া

‘আমরা কুকুর নই যে ত্রাণের জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকব’

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

গাজার মধ্যাঞ্চলের আল জাওয়ায়দা শহরে সোমবার আকাশপথে মানবিক সহায়তা নিক্ষেপের পর ত্রাণ সংগ্রহ করতে দলে দলে ছুটে যান বহু ফিলিস্তিনি। এই খাদ্য সহায়তা তাদের অনেকের দিনের একমাত্র আহার হয়ে উঠেছে। তবে অনেকে বলছেন, এমনভাবে সাহায্যের পেছনে ছোটার মাধ্যমে তাদের মর্যাদাহানি ঘটানো হচ্ছে।

‘এই ত্রাণ আমাদের জন্য লজ্জাজনক। আমরা কুকুর নই, যে আমাদের এভাবে ছুটতে হবে ত্রাণের পেছনে।’ এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানান স্থানীয় বাসিন্দা আহমাদ ফাইজ ফাইয়াদ। সিএনএনকে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সম্মানের সঙ্গে ক্ষুধায় মরতে রাজি, অপমান আর নোংরামিতে নয়।’

সম্প্রতি জর্ডান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রথমবারের মতো গাজায় আকাশপথে খাদ্য সহায়তা পাঠায়। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে চরম খাদ্যসংকটে পড়া ফিলিস্তিনিদের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে বাসিন্দারা বলছেন, এই পদ্ধতি শুধু তাদের দুর্ভোগই বাড়াচ্ছে।

ফাইয়াদ বলেন, ‘যারা এই কাজ করছে, তাদের কোনো লজ্জা নেই। আমরা চাই, সহায়তা যেন স্থলপথে প্রবেশ করে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে মর্যাদার সঙ্গে বিতরণ করা হয়।’

তিনি নিজে কোনো ত্রাণ সংগ্রহ করেননি বলেও জানান, যদিও অন্য অনেকেই আমিরাতের রেড ক্রিসেন্টের চিহ্নযুক্ত বাক্সগুলোর পেছনে ছুটছিলেন। সিএনএনের ভিডিওতে দেখা যায়, লোকজন যখন বাক্সগুলো কুড়িয়ে নিচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেকেই দৌড়ে পালিয়ে যান।

একজন ব্যক্তি জানান, তিনি কিছুটা আটা সংগ্রহ করতে পেরেছেন, কিন্তু তা আট সদস্যের পরিবারের জন্য যথেষ্ট নয়। আরেকজন বৃদ্ধা বলেন, তিনি খাবার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি, কারণ হুড়োহুড়িতে প্রায় পিষেই যাচ্ছিলেন।

কেউ কেউ অবশ্য প্রাপ্ত খাদ্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, তবে ত্রাণ বিতরণের এই পদ্ধতিকে সহিংসতার ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন তারা।

ত্রাণ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ আল বারা বলেন, ‘আমি এই বাক্সটা পেয়েছি, আল্লাহর শুকরিয়া। এটা আমাদের ক্ষুধা কিছুটা হলেও কমাবে।’ সিএনএন এর সাংবাদিককে তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, যারা সাহায্য করেছেন তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু আপনি নিজের চোখে দেখছেন—ত্রাণের জন্য লড়াই করে মানুষ মরছে। এ দৃশ্য বর্ণনার বাইরে।’

উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই সতর্ক করেছে, গাজায় আকাশপথে ত্রাণ পাঠানো অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং বিপজ্জনক।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের প্রধান সংস্থার মুখপাত্র জুলিয়েট টোমা বলেন, ‘যেখানে শত শত ট্রাক স্থলপথে পাঠানো যায়, সেখানে কেন আকাশপথের ঝুঁকি নিতে হবে? স্থল পথে ত্রাণ পাঠানো অনেক সহজ, কার্যকর, দ্রুত, সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদেরের পদ স্থগিত

লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে তিস্তার পানি

বাঙলা কলেজ সাংবাদিক সমিতির ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

ছারছীনা পীরকে তারেক রহমানের ‘সালাম’

ড্যাবের ৮ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বিএনপির

বাংলাদেশে ২৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে হানডা

পুলিশের ১১ কর্মকর্তাকে বদলি

বিএনপি নেতা রকিবুল ইসলাম বকুলের রোগমুক্তি কামনায় দোয়া

সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য, আছে শর্ত

সত্য বললে আর মামলা-নির্যাতন হবে না : আমিনুল হক

১০

খুলনার ভিডিও নিয়ে শ্যামনগরে চিকিৎসকদের নামে অপপ্রচারের অভিযোগ

১১

মিরসরাইয়ে বিএনপি-যুবদলের শীর্ষ পাঁচ নেতা বহিষ্কার

১২

ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী-ভোটাররা যা করতে পারবেন, যা পারবেন না

১৩

বিসিসিআই অফিসে ৮ লাখ টাকার জার্সি চুরি, গার্ড গ্রেপ্তার

১৪

‘জুলাই সনদ’ ২ বছরের মধ্যে বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির

১৫

মসজিদের বিদ্যুৎ বিল মওকুফ চেয়ে ইউএনওর কাছে ছাত্রদল নেতার আবেদন

১৬

যে শহরে থাকলেই মিলবে ৬০ লাখ টাকা, শুধু থাকতে হবে সেখানে

১৭

আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখতে এনসিপি নেতাদের প্রতি আহ্বান প্রিন্সের

১৮

এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ লাখ কোটি টাকারও বেশি

১৯

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, আতঙ্কে এলাকাবাসী

২০
X