কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আল আকসা মসজিদ নিয়ে ভয়ংকর পরিকল্পনা

আল আকসা এলাকা। ছবি : সংগৃহীত
আল আকসা এলাকা। ছবি : সংগৃহীত

আল আকসা মসজিদের ভেতরে ইহুদিরা দলবদ্ধভাবে উচ্চস্বরে প্রার্থনা করছে, গান গাইছে, নাচছে এবং ইসরায়েলি পতাকা ওড়াচ্ছে। মুসলিমদের অন্যতম পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদে এমন দৃশ্য কিছুদিন আগেও ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু গত মাসে এসব ঘটনাই ঘটেছে।

ফিলিস্তিনি এবং বিশ্ব মুসলিমদের কাছে আল আকসা শুধু একটি মসজিদ নয়, বরং স্বাধীনতা, আত্মপরিচয় ও মুক্তির সংগ্রামের প্রতীক। অন্যদিকে ইহুদিদের বিশ্বাস, এ স্থানেই নির্মিত হবে তাদের তৃতীয় মন্দির বা ‘থার্ড টেম্পল।’

দীর্ঘদিন ধরে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে আল আকসায় কেবল মুসলিমদের প্রার্থনার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করার পর থেকে ধীরে ধীরে মুসলিমদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয় এবং বিপরীতে ইহুদিদের প্রবেশাধিকার বাড়ানো হয়। বিশেষ করে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর ইসরায়েলি বসতিতে হামলার পর থেকে এ চর্চা আরও বেড়েছে।

বর্তমানে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ও আঞ্চলিক উত্তেজনার মাঝেই আল আকসা নতুন এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ফিলিস্তিনি আশঙ্কা করছেন, মসজিদটির ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক পরিচয় মুছে দিয়ে এটিকে ধাপে ধাপে ইহুদিদের উপাসনালয়ে রূপান্তর করা হচ্ছে।

প্রথমে নির্দিষ্ট কিছু দিনে ইহুদিরা আল আকসায় প্রবেশ করলেও ২০১৭ সাল থেকে এটি প্রায় প্রতিদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, ফজরের নামাজের পর ও জোহরের নামাজের পর ইহুদিদের দলবদ্ধভাবে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এতে ধীরে ধীরে মসজিদ প্রাঙ্গণকে মুসলিমদের পাশাপাশি ইহুদিদেরও প্রার্থনাস্থল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

আল আকসার ওপর ইসরায়েলের কার্যত সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে আগের চুক্তিও অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ২০২৩ সালের মাঝামাঝিতে ইসরায়েলি সংসদ সদস্য অমিত হালেভি মসজিদ কমপ্লেক্সকে মুসলিম ও ইহুদিদের মধ্যে ভাগ করার প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাব অনুযায়ী, কমপ্লেক্সের দক্ষিণাংশের প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে এবং বাকি অংশ, যেখানে ‘ডোম অব দ্য রক’ অবস্থিত, তা ইহুদিদের জন্য সংরক্ষিত হবে।

এক বছর পর কট্টরপন্থি মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির এই ধারণার প্রতি সমর্থন জানান। যদিও তিনি সরাসরি মসজিদ ভাগ করার কথা বলেননি, তবে কমপ্লেক্সের ভেতরে একটি সিনাগগ বা ইহুদি উপাসনালয় স্থাপনের পক্ষে অবস্থান নেন।

সর্বশেষ, চলতি বছরের মে মাসে অর্থমন্ত্রী বেজায়েল স্মোরিচ ‘জেরুজালেম দিবস’ উপলক্ষে এক সমাবেশে ঘোষণা দেন, তারা ইসরায়েলের সীমান্ত প্রসারিত করবেন এবং আল আকসায় তৃতীয় মন্দির পুনর্নির্মাণ করবেন।

ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা, হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদের মতোই প্রথমে আল আকসার ভেতরে একটি সিনাগগ তৈরি করে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ দখল নেওয়া হবে। এটি শুধু মসজিদের অস্তিত্বই নয়, মুসলিম বিশ্বের জন্যও গভীর হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

সূত্র : মিডলইস্ট আই

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুই বাংলাদেশি যুবককে ফেরত দিল বিএসএফ

বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী জনগণের পাশে রয়েছে : নীরব

শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ

ছক্কার ঝড় তুলে ম্যাচসেরা সাইফের মুখে আত্মবিশ্বাসের কথা

আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করে তৃপ্ত জাকের

আবারও ভারতের কাছে কুপোকাত পাকিস্তান

সাবেক যুবদল নেতার উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার 

আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা

কাশিয়ানীতে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চান মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীরা

১০

নির্বাচনের জন্য দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি : লায়ন ফারুক 

১১

সাইফ ঝড়ে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

১২

আফগানদের বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

১৩

বৃষ্টিসহ আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

১৪

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও কার্টিন ইউনিভার্সিটির চুক্তি স্বাক্ষর

১৫

স্মার্ট কার্ডের সংকট কাটাতে আসছে ‘ব্ল্যাংক কার্ড’

১৬

সেই বিয়ের কথা স্বীকার করলেন পরীমনি

১৭

দুর্গোৎসবে টাইমস স্কয়ারে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আবহ

১৮

‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ২০০৯’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি

১৯

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা সংশোধন

২০
X