দীর্ঘ সাত বছর পর ইয়েমেন থেকে কোনো বাণিজ্যিক ফ্লাইট সরাসরি সৌদি আরবে গেছে। গতকাল শনিবার রাত ৮টায় সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইয়েমেন এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট ২৭০ জন ইয়েমেনি হজযাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের পর ইয়েমেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সানা থেকে সৌদি আরব যাওয়া এটিই প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট। এটাকে দুদেশের মধ্যকার উত্তেজনা কমাতে সবশেষ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সানা বিমানবন্দরের প্রধান খালিদ আল-শায়েফ বলেন, এ বছর হজযাত্রী নিয়ে সানা থেকে সৌদি আরবে পাঁচটি ফ্লাইট যাবে। এর মধ্যে এটি প্রথম ফ্লাইট। আগামী সোম ও বুধবার ইয়েমেনিয়া এয়ারওয়েজের আরও দুটি ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
২০১৪ সালে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে পরের বছর ইরান-সমর্থিত হুতিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। ২০১৬ সালের আগস্টে সৌদি জোটের অবরোধের কারণে এতদিন সানা বিমানবন্দর বন্ধ ছিল। অবরোধের সাত বছর পর গতকাল সানা বিমানবন্দর থেকে কোনো বাণিজ্যিক ফ্লাইট দেশটির বাইরে গেল।
এদিকে অবরোধ শেষ ও বিমানবন্দর পুনরায় চালু হওয়ার সম্ভাবনায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মোহাম্মদ আসকার নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব খুশি। আমার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।’
হুথিদের গণপূর্তমন্ত্রী গালেব মুতলাক বলেন, দেশের বাইরে যেতে ইচ্ছুক এমন ২৪ হাজার মানুষের জন্য প্রায় ২০০ ফ্লাইটের প্রয়োজন হবে।
হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী নজিব আল আজি বলেন, আজকের ঘটনাকে ভালো কিছুর ইঙ্গিত বলেই মনে করছি। দেশের সব বিমানবন্দর বিশেষ করে সানা বিমানবন্দর সব ইয়েমেনির জন্য খোলা থাকবে।
ইয়েমেনে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চাইছে সৌদি সরকার। এরই অংশ হিসেবে গত এপ্রিলে হুথিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা সম্পন্ন করেছে সৌদি প্রতিনিধি দল। সম্প্রতি সৌদি আরব ও ইরান কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করলে এ শান্তি আলোচনা শুরু হয়। এমনকি রিয়াদের মধ্যস্থতায় গত এপ্রিলে হুথি ও দেশটির সরকারের মধ্যে বন্দি বিনিময়ে দুপক্ষের আট শতাধিক বন্দি মুক্তি পায়।
প্রায় এক যুগ ধরে চলমান ইয়েমেন যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ যুদ্ধকে সৌদি আরব ও ইরানের প্রক্সি যুদ্ধ হিসেবে দেখা হত। তবে তেহরান ও রিয়াদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ফলে এ যুদ্ধ শেষ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন