ইসরায়েল-সৌদি আরব সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে দুপক্ষের সঙ্গেই দফায় দফায় আলোচনা করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন চাপের মুখে এ বিষয়ে অনেকটা এগিয়ে গেছে দুপক্ষ, এমন গুঞ্জনও রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ৩০ বছর পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীর সফরে গেছে সৌদি প্রতিনিধিদল।
আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি সাবাহ।
আজ মঙ্গলবার পশ্চিম তীরে পৌঁছায় সৌদি প্রতিনিধিদল। তাদের নেতৃত্বে রয়েছেন ফিলিস্তিনে নিযুক্ত সৌদি অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত নায়েফ আল-সুদাইরি। গত মাসেই তাকে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে ফিলিস্তিনের প্রতিবেশী দেশ জর্ডানে সৌদি রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এই প্রতিনিধিদল ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও শীর্ষ কূটনীতিক রিয়াদ আল মালিকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।
সৌদি এই প্রতিনিধিদলটি জর্ডান থেকে সড়ক পথে পশ্চিম তীর গেছে। এর মাধ্যমে ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তির পর সৌদি আরব থেকে প্রথম কোনো প্রতিনিধিদল পশ্চিম তীর সফরে গেল। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত অবসানের লক্ষ্যে ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তি হয়েছিল।
২০২০ সালে আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে আরব বিশ্বের চার দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদান। এতদিন সে পথে না হাঁটলেও সম্প্রতি মার্কিন চাপের মুখে এ বিষয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছে রিয়াদ। গত সপ্তাহে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে তারা অনেক কাছাকাছি চলে এসেছে।
সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করা গেলে তা মধ্যপ্রাচ্যে গেম-চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ইসরায়েল-সৌদির সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারলে, তা বড় কূটনৈতিক বিজয়ই হবে জো বাইডেনের জন্য।
তবে গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া এক ভাষণে এসব ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যুগের পর যুগ সহিংসতা চলে আসছে। অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় সম্প্রতি এ সহিংসতার মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পথেই হাঁটতে তবে। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, যারা মনে করেন যে, ফিলিস্তিনি জনগণের পূর্ণ, বৈধ ও জাতীয় অধিকার বাস্তবায়ন ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব, তারা ভুল করছেন।