দীর্ঘ একমাসের বেশি সময় ধরে গাজায় নির্বিচারে হামলা চালিয়েও বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্ত করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে তেল আবিব। এমনকি স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের পাল্টা আক্রমণের মুখে একে একে বহু সামরিকযানসহ সেনাসদস্যও হারাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাবাহিনী। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ফিলিস্তিনের মাটিতে ইসরায়েলের জন্য কী অপেক্ষা করছে তা স্পষ্ট করে জানিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকার স্বাধীনতাকামী যোদ্ধা দলটি জানিয়েছে তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এক ভাষণে এমনটা জানিয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া। ফিলিস্তিনি এই নেতা জানান, যদি ইসরায়েলিরা দীর্ঘস্থায়ী একটি যুদ্ধ চায়, তবে হামাসের সক্ষমতা তার চেয়েও বেশি রয়েছে। আর এই যুদ্ধে একমাত্র ফিলিস্তিনিরাই বিজয়ী হবে। ভাষণে হামাসের এই নেতা ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিভিন্ন দলের মধ্যে সমন্বয়ের প্রশংসা করে জানান, তারা ইসরায়েলি বাহিনীর সক্ষমতাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবে। নেতানিয়াহুর সেনাদের প্রতি হুঙ্কার দিয়ে বলেন, বিশ্ব ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে আল কাসাম ব্রিগেড ও অন্যান্য প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিজয়ের স্বাক্ষী হবে। ইহুদি সেনারা গাজা থেকে ব্যর্থতা, হতাশা আর পরাজয় ছাড়া কিছুই নিয়ে ফিরতে পারবে না। এ সময় ফিলিস্তিনের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি নিয়েও মন্তব্য করেন। বলেন, উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ না করা পর্যন্ত ইসরায়েলি বন্দিরা মুক্তি পাবে না। জানান, গত ৪১ দিনের যুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণ ও প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরায়েলের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়েছে। তারা ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে তাড়ানো এবং ইসরায়েলি বন্দিদের শক্তির জোরে মুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল, কিন্তু এর কোনোটিই সফল হয়নি। হানিয়া জানান, গাজা উপত্যকার মাটিতে প্রতিরোধের নায়করা গৌরবগাঁথা লিখছেন। তারা বীরত্ব, সাহস এবং সাহসিকতায় তাদের সমকক্ষদের সঙ্গে তুলনীয়। ফিলিস্তিনি জাতি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় উগ্রবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই লড়াই সম্মান ও মর্যাদার লড়াই। হামাসের এ নেতা বলেন, ইসরায়েলিরা গাজার হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধেও যুদ্ধে নেমেছে। তাদের এই পদক্ষেপ সকল আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি ও আইনের পরিপন্থি। এ সময় ইসরায়েলের সব পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে বলে জানান এই নেতা। ফিলিস্তিনের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ দিতে ইসরায়েলকে যুদ্ধ বন্ধ এবং সব ক্রসিং পয়েন্টগুলো খুলে দিতে বাধ্য করতে হবে। জানান, ইসরায়েলি বাহিনী নিজেদেরকে সব আইনের ঊর্ধ্বে বলে মনে করে। গোটা বিশ্বের জানা উচিত কেবল গাজার জনগণ তথা ফিলিস্তিনি জাতিই গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার রাখে।
মন্তব্য করুন