গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে সরাসরি সমর্থন দিয়ে আসছে ইরান। অভিযোগ রয়েছে—হামাসকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণও দিয়েছে তেহরান। দেশটির এমন অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে গাজার যোদ্ধারা। তবে, ইরানকে আর ফিলিস্তিনে দেখতে চায় না দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহ। দলটির অভিযোগ অধিকৃত পশ্চিম তীরে বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর চেষ্টা করছে তেহরান।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর চেষ্টা করার জন্য বুধবার ইরানকে অভিযুক্ত করেছে ভূখণ্ডটির প্রধান ফিলিস্তিনি উপদল ফাতাহ। দলটি বলেছে, তারা বাইরে থেকে এমন যে কোনো কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করবে, যার সঙ্গে ফিলিস্তিনি উদ্দেশ্যের কোনো সম্পর্ক নেই।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণকারী ফাতাহ আন্দোলন বলেছে, ‘আমাদের পবিত্র উদ্দেশ্য এবং আমাদের জনগণের রক্তকে শোষণ করার অনুমতি ফাতাহ দেবে না’। তারা আরও বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনী বা জাতীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করার লক্ষ্যে বাইরে থেকে কোনো হস্তক্ষেপ করা হলে তার বিরুদ্ধে শক্ত জবাব দেওয়া হবে।
রয়টার্স বলছে, হামাসসহ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে ইরান সাহায্য করছে বলে ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে। গাজার ক্ষমতাসীন এই দলটি গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পশ্চিম তীরে তাদের শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে।
গেল মার্চে ইসরায়েল দাবি করেছিল—পশ্চিম তীরে ট্যাংক-বিধ্বংসী মাইনসহ অত্যাধুনিক অনেক অস্ত্র পাচার ঠেকিয়ে দিয়েছে তারা। অবশ্য অতীতে প্রকাশ্যেই ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেওয়ার কথা স্বীকার করে ইরান।
রয়টার্স বলছে, ফাতাহের এই বিবৃতি এমন সময়ে সামনে এলো, যখন নিরাপত্তা পরিষদে চলতি মাসেই ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য করার আহ্বান জানিয়েছে। এই পদক্ষেপ দুই রাষ্ট্র সমাধানের জন্য ইসরায়েলের ওপর বিশ্বব্যাপী চাপ বাড়াবে।
দুটি ভূখণ্ডে বিভক্ত ফিলিস্তিন। পশ্চিম তীর শাসন করছে মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ এবং গাজার নিয়ন্ত্রণ হামাসের হাতে। তবে, সম্প্রতি পশ্চিম তীরেও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে হামাস। কারণ, ফাতাহ যখন ইসরায়েলি আগ্রাসনেও চুপ, তখন এর প্রতিরোধ করছে হামাস। যা গোষ্ঠীটিকে গাজার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও জনপ্রিয় করে তুলেছে। তাদের এই জনপ্রিয়তা ফাতাহর জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মন্তব্য করুন