কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৩ পিএম
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কাতার ছাড়ার চিন্তা করছেন ফিলিস্তিনি নেতারা

কাতারের শাসক আমির তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। ছবি : সংগৃহীত
কাতারের শাসক আমির তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। ছবি : সংগৃহীত

গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বড় ভূমিকা রেখে আসছে পারস্য উপসাগরের ছোট দেশ কাতার। তবে যুদ্ধের এক মাসের মাথায় দুপক্ষের মাঝে সাতদিনের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করাতে পারলেও এরপর আর কোনো চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। নতুন যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না করতে পারায় দোহার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে হামাসের ওপর আরও চাপ বাড়াতে কাতার সরকারকে চাপ দিচ্ছে তেল আবিব ও ওয়াশিংটন। এমন পরিস্থিতিতে কাতার থেকে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যালয় সরিয়ে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে হামাস। যদি হামাস এমনটা করে তাহলে ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন কোনো চুক্তি সম্পাদন আরও কঠিন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাস যদি কাতার ত্যাগ করে তাহলে গাজায় বন্দি কয়েক ডজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করার জন্য যে আলোচনা চলছে তা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এ ছাড়া হামাসের সঙ্গে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা আদান-প্রদানের পথ আরও কঠিন হয়ে পড়বে। হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে রেখেছে ইসরায়েল ও তাদের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। তাই ফিলিস্তিনি এই সংগঠনের সঙ্গে এই দুই দেশের কোনো সরাসরি যোগাযোগ নেই। তাই হামাস নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কাতার, মিসর বা তুরস্কের মতো দেশের ওপর নির্ভর করতে হয় তেল আবিব ও ওয়াশিংটনকে। এখন হামাস যদি কাতার ছেড়ে যায়, তাহলে এই যোগাযোগ প্রক্রিয়া আরও কঠিন হবে।

আরব কর্মকর্তারা বলছেন, দোহা থেকে নেতাদের সরিয়ে নিতে সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের দুটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে হামাস। দুটির একটি দেশ হলো ওমান। তবে অন্য দেশের নাম জানা যায়নি। তারা বলছেন, বর্তমানে যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি চুক্তি আলোচনায় যে ধীরগতি দেখা দিয়েছে তা আরও কয়েক মাস চলতে পারে বলে মনে করে হামাস। তাই কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে হতে পারে তাদের।

এ বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন একজন আরব মধ্যস্থতাকারী বলেছেন, যুদ্ধবিরতি আলোচনা ইতিমধ্যে স্থগিত হয়ে গেছে। এটি শিগগিরই পুনরায় শুরু হবে এমন কোনো লক্ষণ নেই। এই জন্য হামাস ও আলোচকদের মধ্যে অবিশ্বাস বাড়ছে।

২০১২ সাল থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় বসবাস করছেন হামাসের প্রথম সারির নেতারা। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে তাদের আশ্রয় দিয়েছিল কাতার। পরে ইসরায়েলের অনুরোধে হামাসকে অর্থকড়ি দেয় দেশটি। এসবের বিনিময়ে গত এক দশকে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সহায়তা করে আসছিল কাতার।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন। এরপর থেকে হামাসের সঙ্গে নতুন আরেকটি চুক্তি বাস্তবায়নে মধ্যস্থতা করে আসছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে চুক্তির শর্ত নিয়ে দুপক্ষের মাঝে মতবিরোধ থাকায় এটি আর বেশি দূর অগ্রসর হয়নি।

অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ১২ জনে পৌঁছেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত আহত হয়েছে ৭৬ হাজার ৮৩৩ জন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্রাজিলে ভারী বৃষ্টিপাতে নিহত ৩৯

বনানীতে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

দুর্ঘটনার ২১ ঘণ্টা পার হলেও শেষ হয়নি উদ্ধার অভিযান

বায়ুদূষণে শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার খবর কী?

স্টার্ক দেখালেন কেন তিনি সবচেয়ে দামি?

গুদামের চাবি নিয়ে লাপাত্তা খাদ্য কর্মকর্তা

যুক্তরাষ্ট্রের ভণ্ডামির মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে : ইরান

দুপুরের মধ্যে ঝড়ের আভাস, ৭ অঞ্চলে সতর্কসংকেত

ঢাকাসহ যে ৫ বিভাগে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস

হাতের টানে ওঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ

১০

দিনটি কেমন যাবে আপনার, জেনে নিন রাশিফলে

১১

ব্রিটিশ অস্ত্রে সরাসরি রাশিয়ায় হামলার অনুমতি দিল যুক্তরাজ্য

১২

ধর্ষণ মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

১৩

জবি হলে আগুন, আতঙ্কে জ্ঞান হারালেন ছাত্রী

১৪

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ-গাম্বিয়া

১৫

কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৬

সকালের মধ্যে তীব্র ঝড় হতে পারে যেসব অঞ্চলে

১৭

আজ বন্ধ থাকবে যেসব জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

১৮

শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

১৯

৪ মে : নামাজের সময়সূচি

২০
*/ ?>
X