গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে যাত্রা করা আন্তর্জাতিক নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ওপর ড্রোন হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত মাসের শুরুর দিকে তিউনিসিয়ার সিদি বু সাঈদ বন্দরে নোঙর করা ফ্লোটিলার দুটি নৌযানের ওপর ওই হামলা চালানো হয়।
মার্কিন দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ৪০টির বেশি নৌযান ও প্রায় ৫০০ মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে যাত্রা করেছিল ফ্লোটিলাটি। এসবের মধ্যে একটি নৌযানে ছিলেন সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।
তাদের দাবি, ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলি বাহিনী একটি সাবমেরিন থেকে ড্রোন উড়িয়ে আলাদাভাবে দুটি নৌযানকে লক্ষ্য করে। ড্রোন থেকে দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করা হলে পর্তুগিজ পতাকাবাহী নৌযান ‘ফ্যামিলি’ এবং ব্রিটিশ পতাকাবাহী নৌযান ‘আলমা’তে আগুন ধরে যায়। তবে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সিবিএস জানায়, হামলার আগের রাতেই পর্তুগিজ সংসদ সদস্য মারিয়ানা মরটাগুয়া ওই নৌকাটিতে ছিলেন। যদিও এ ঘটনায় নেতানিয়াহু বা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী বেসামরিক মানুষ ও স্থাপনার ওপর দাহ্য অস্ত্র দিয়ে হামলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই এ হামলা শুধু নিন্দনীয়ই নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গাজার ওপর কঠোর নৌ অবরোধ জারি রেখেছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে প্রথম এই অবরোধ কার্যকর করা হয়, যাতে গাজার উপকূলীয় জলে প্রবেশে সব ধরনের নৌযানকে বাধা দেওয়া হয়।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মূলত আন্তর্জাতিক মানবিক উদ্যোগ হিসেবে গড়ে উঠেছে। এর লক্ষ্য—অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এবং ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙা।
এদিকে গত বুধবার থেকে গাজার জলসীমায় প্রবেশের আগেই ফ্লোটিলার সব নৌযান আটক করেছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। জাহাজগুলো জব্দ করার পাশাপাশি আরোহীদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন