ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও চরম উত্তেজনার দিকে ধাবিত হচ্ছে। গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পর্যটননগরী পেহেলগামে এক বোমা হামলায় অন্তত ২৬ জন নিরীহ ভারতীয় পর্যটকের মৃত্যু হয়।
ভয়ংকর এই ঘটনার জন্য ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। নয়াদিল্লির দাবি, পাকিস্তানের মদতেই হামলাটি সংঘটিত হয়েছে। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং ভারত এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি, তবুও দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
এদিকে ভারতের অভ্যন্তরে সরকারপন্থি গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলে দাবি উঠেছে, পাকিস্তানে যে কোনো সময় ‘বদলা’ নেওয়ার মতো হামলা চালানো হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়ে দিয়েছেন শত্রুপক্ষকে জবাব দেওয়ার জন্য।
এমন এক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ তার পূর্বনির্ধারিত মালয়েশিয়া সফর স্থগিত করেছেন। আগামী শুক্রবার (৯ মে) মালয়েশিয়া সফরে যাওয়ার কথা ছিল তার। তবে শেষ মুহূর্তে সেই সফর বাতিল করা হয়। খবর এএফপি।
সোমবার (৫ মে) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিবৃতিতে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ভারতীয় নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলার কারণে ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, আমি তার প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতি জানাই। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি, তা আমি উপলব্ধি করি। মালয়েশিয়া আশা করে, পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত হবে।
অপরদিকে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকেও সফর স্থগিতের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। রোববার (৪ মে) রাতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে টেলিফোনে কথা হয়। সেখানেই সফর পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আনোয়ার ইব্রাহিমকে আশ্বস্ত করেছেন, চলতি বছরের শেষ দিকে তিনি মালয়েশিয়ার সরকারি সফরে যাবেন এবং তখন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।
যদিও সফরটি স্থগিত হয়েছে, তবে উভয় দেশই আশাবাদী, দ্বিপক্ষীয় সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা আগের মতোই অব্যাহত থাকবে।
সম্প্রতি ভয়াবহ এই ঘটনার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংকট আরও স্পষ্টভাবে সামনে এসেছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ভারসাম্যের জন্য নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করছে।
সূত্র : জিও নিউজ
মন্তব্য করুন