কয়েক দিনের হামলা-পাল্টা হামলার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। দুই দেশের এ সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছে শতাধিক মানুষ। ধ্বংস হয়েছে বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান। ড্রোন ধ্বংস হয়েছে কয়েক ডজন। এমন পরিস্থিতিতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে দুই দেশ।
দুই দেশের মধ্যকার এ যুদ্ধে আজ কী কী ঘটেছে তার বিস্তারিত তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। শনিবার (১০ মে) এক প্রতিবেদনে আজকের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাতভর ড্রোন হামলা ও গোলাবর্ষণের মাধ্যমে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করেছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারত তাদের তিনটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। এর জবাবে পাকিস্তানও ভারতের ১০টি বিমানঘাঁটি ও অন্তত ২০টি নিশানায় হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, তার দেশ ভারতকে ‘সমুচিত’ জবাব দিয়েছে। ভারতের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এতে বেসামরিক নাগরিকরা বিপদের মুখে পড়েছেন।
এরপর শনিবার (১০ মে) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় প্রথম যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরম ট্রুথ স্যোশালে শেয়ার করা এক পোস্টে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাত ধরে আলোচনার পর আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও অসাধারণ বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়ার জন্য উভয় দেশকে আমি অভিনন্দন জানাই। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ!’
পরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, আমি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে, ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং উভয় দেশ ‘নিরপেক্ষ একটি স্থান’ আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে রুবিও বলেছেন, গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে তিনি এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং শাহবাজ শরিফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর, সেনাপ্রধান আসিম মুনির এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, অসীম মালিকসহ ঊর্ধ্বতন ভারতীয় ও পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে’ আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং শরিফের প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা এবং রাষ্ট্রনায়কত্বের জন্য আমরা তাদের প্রশংসা করি।’
এদিকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন, ‘পাকিস্তান ও ভারত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকরভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। পাকিস্তান সর্বদা তার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার সঙ্গে আপস না করে এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে!’
মন্তব্য করুন