পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আশঙ্কা করছেন, ভারত শিগগিরই আরেকটি দুঃসাহসিক অভিযান চালাতে পারে। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, উসকানি এলে পাকিস্তান কঠোর জবাব দেবে।
বুধবার জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা। চাপ ও জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার কারণে তিনি হতাশা থেকে বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি মোদি এমন কিছু করেন, তাহলে পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে—এবং এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে।’
আসিফ বলেন, পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে এমনকি ভারতের মিত্ররাও মোদির পাশে না-ও দাঁড়াতে পারেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, পাকিস্তান কারও চাপের মুখে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়নি। বরং যুক্তরাষ্ট্রসহ বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সহায়তায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা চার দিন সংযম দেখিয়েছি, আশা করেছিলাম ভারত যুক্তিসংগত আচরণ করবে। এই সংঘাতে আমাদের জয় বহুমাত্রিক—প্রথমবারের মতো সাইবার যুদ্ধে ভারতীয় ডিজিটাল কাঠামো ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা। চাপ ও জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার কারণে তিনি হতাশা থেকে বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারেন
আসিফ জানান, চলমান সংঘাতে পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান (রাফালসহ) এবং একটি ইউএভি (ড্রোন) ভূপাতিত করেছে। ৭৭টি ইসরায়েলি হারপ ড্রোনও প্রতিহত করা হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, ‘যারা আগে আমাদের গুরুত্ব দিত না, এখন তারা সম্মানের চোখে দেখছে।’
খাজা আসিফ বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ভারত কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হয়েছে—এটাই পাকিস্তানের কূটনৈতিক সাফল্য।’
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলায় ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোর ওপর দোষ চাপালেও কোনো প্রমাণ পেশ করেনি। পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করে।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ভারত ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে, ভিসা বাতিল করে ও সিন্ধু নদী চুক্তি স্থগিত করে, যাকে পাকিস্তান ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ বলে আখ্যা দেয়।
ভারতের ‘অপারেশন সিন্ধুর’ জবাবে পাকিস্তান চালায় ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসূস’। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ড্রোন হামলা ও বিমান হামলা হয়।
এরপর ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্থল, আকাশ ও সমুদ্রে সামরিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেয়। এ ঘোষণা প্রথমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেন। পরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তা নিশ্চিত করেন।
যদিও যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ রেখার দু’পাশে আবারও ছোটখাটো গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে।
মন্তব্য করুন