পাকিস্তানে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে হেলিকপ্টারে থাকা পাইলটসহ সব আরোহী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখাওয়ায় ত্রাণবাহী একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে হেলিকপ্টারের দুই পাইলটসহ পাঁচজন ক্রু সদস্য নিহত হয়েছেন।
প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্ডাপুর জানিয়েছেন, প্রাদেশিক সরকার পরিচালিত এমআই-১৭ হেলিকপ্টারটি শুক্রবার খাইবার পাখতুনখাওয়ার বন্যা দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে গিয়ে খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিধ্বস্ত হয়।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল জিও নিউজ জানিয়েছে, দেশজুড়ে টানা বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যায় এখন পর্যন্ত ২২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে খাইবার পাখতুনখাওয়াতেই ২০৬ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও গিলগিট-বালতিস্তান এবং পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে (আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর) হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
প্রাদেশিক উদ্ধারকারী সংস্থা রেসকিউ ১১২২-এর মুখপাত্র বিলাল আহমেদ ফয়েজি জানিয়েছেন, খাইবার পাখতুনখাওয়ার বাজাউর জেলার সালারজাই এলাকায় ভোরে মুষলধারে বৃষ্টির পাশাপাশি একটি ক্লাউডবার্স্ট (অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত) ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে। এতে বহু ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে যায়।
উদ্ধারকারী দল জানিয়েছে, এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রাদেশিক প্রশাসন খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে ভূমিধস ও প্রবল বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকায় লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরেক দফা মৌসুমি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
তারা আরও সতর্ক করে জানিয়েছে, উচ্চভূমির বরফ ও হিমবাহ দ্রুত গলতে থাকায় নদীগুলোর পানির স্তর বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা নতুন করে ভয়াবহ বন্যা ডেকে আনতে পারে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাত চলে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই বর্ষণ এখন আরও বেশি অনিয়মিত ও বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে, যা প্রতি বছর পাকিস্তানে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মন্তব্য করুন