পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খানকে অবশেষে পাঞ্জাবের অ্যাটক কারাগার থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে নেওয়া হয়েছে। তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় সাজার পর থেকে এতদিন অ্যাটক কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ইমরান খানকে আদিয়ালা কারাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশের একটি বিশাল বহর অ্যাটক কারাগারে যায়। এরপর পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ১৮টি গাড়ির একটি বহর তাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদিয়ালা কারাগারে নিয়ে যায়। ১৮টি গাড়ির মধ্যে ইসলামাবাদ পুলিশের ১৫টি, দুটি সাঁজোয়া যান ও একটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। পিটিআইপ্রধানের আইনি দলের মুখপাত্র নাঈম পাঞ্জোতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় সাজার পর থেকেই পাঞ্জাবের অ্যাটক কারাগারে বন্দি ছিলেন ইমরান খান। তবে সাজাপ্রাপ্তের পর থেকেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় অ্যাটক কারাগারের পরিবর্তে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তরের আবেদন করে আসছিলেন ইমরান ও তার দল পিটিআই। অবশেষে গতকাল সোমবার ইমরান খানকে আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি)।
জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে সাইফার বা গোপন তারবার্তার মামলা ইসলামাবাদে দায়ের করা হয়েছে। ফলে ইসলামাবাদের মালায় বন্দিকে সংশ্লিষ্ট বিচারিক কারাগারে রেখেই বিচারকাজ পরিচালনা করতে হবে। এ যুক্তির ওপর ভিত্তি করেই তাকে আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আইএইচসির প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক বলেন, ইসলামাবাদে দায়ের করা সাইফার মামলায় বিচারাধীন বন্দি ইমরান খান। তাহলে আদিয়ালা কারাগারের পরিবর্তে তাকে কেন অ্যাটক কারাগারে রাখা হবে?
গত ৫ আগস্ট ইসলামাবাদের জেলা বিচারিক আদালত তোশাখানা মামলায় ইমরানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর থেকে অ্যাটক কারাগারেই আছেন ইমরান। গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (এএইচসি) এই সাজা স্থগিত করেন। কিন্তু অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে রিমান্ডে থাকায় তিনি কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে ইমরানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) যে অভিযোগ দায়ের করেছে, তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের পাঠানো একটি গোপনীয় বার্তার বিষয়বস্তু তিনি জনসমক্ষে ফাঁস করে দিয়েছেন। এ ছাড়া এটিকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ব্যবহার করেছেন।
সাইফার মামলা একটি কূটনৈতিক বার্তা সম্পর্কিত, যা ইমরানের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে বলে জানা যায়। পিটিআই অভিযোগ করে বলেছে, হারিয়ে যাওয়া এই বার্তাটিতে যুক্তরাষ্ট্র ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। এই মামলায় পিটিআইর ভাইস চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকেও গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন