পাকিস্তানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এখন আকাশছোঁয়া। দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে দেশটির জনগণের। পাশাপাশি চূড়ান্ত রকমের অস্থির হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের জাতীয় রাজনীতি। এই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এমন একসময়ে বাড়ছে যখন দেশটি তার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।
মূলত সরকার পরিবর্তন এবং বৈদেশিক ঋণের চক্রাকারে সুদ বৃদ্ধির কারণে দেশটির অর্থনীতিতে এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেশটিতে এখন প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দারিদ্র্য ও বেকারত্বের হার। এর সঙ্গে ঊর্ধ্বগতির দিকে রয়েছে মূল্যস্ফীতির সূচক। দেশের এমন সংকটময় মুহূর্তে ‘কোনো কাজই অসম্মানজনক নয়’ এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে অটোরিকশা চালানো শুরু করেছেন পাকিস্তানের বাহাউদ্দিন জাকারিয়া ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মনসুর আকবর কুন্দি। চলতি মাসেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার কথা ছিল তার। বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানসূচক দায়িত্ব দেওয়া হলেও তিনি পদত্যাগ করেছেন। কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মীদের জন্য পেনশনের ব্যবস্থা নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নিয়ে অন্য কাজ করাকেই উপযুক্ত মনে করেছেন তিনি।
উপাচার্য মনসুর আকবর স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি মানুষকে বার্তা দিতে চাচ্ছিলেন যে, পাকিস্তানের চলমান অর্থনৈতিক সংকটে কারও অটোরিকশা চালাতে লজ্জা পাওয়া উচিত না। মনসুর আকবর বলেন, সামাজিক অবস্থান বা মর্যাদা যাই হোক না কেন, কোনো কাজ করার ক্ষেত্রে লজ্জা বা দ্বিধা থাকা উচিত নয়। যে কোন ছোট কাজও একজন মানুষের জীবন বাঁচিয়ে দিতে পারে। তাই যে উপায়ে আয় হয়, সে রকম কোনো উপায়কেই ছোট করে দেখা যাবে না।
দেশের যেসব খেটে খাওয়া মানুষ অক্লান্ত পরিশ্রম করে আয়-রোজগার করেন, তাদের সঙ্গে সংহতি জানানোও তার অটোরিকশা চালানোর উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মনসুর আকবর কুন্দির অটোরিকশা চালানোর বিভিন্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানার পর তাকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন নেটিজেনরা।
পাকিস্তানের বাহাউদ্দিন জাকারিয়া ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭৫ সালে। প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ছিল মুলতান ইউনিভার্সিটি। এটি পাঞ্জাব প্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়।
মন্তব্য করুন