নিয়োগ প্রক্রিয়া
নিয়োগ পরীক্ষা তিন ধাপে হয়। প্রথম ধাপে প্রিলিমিনারিতে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয় ১০০ নম্বরের। দ্বিতীয় ধাপে ২০০ নম্বরের লিখিত এবং শেষে ২৫ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা। পূর্বে নম্বর বণ্টন ও সিলেবাস নিয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকলেও বিগত চারটি পরীক্ষায় বিএসসি নতুন সিলেবাস ও নম্বর বণ্টনে পরীক্ষা নিচ্ছে।
প্রিলিমিনারি
বাছাই পরীক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় দুই লাখ পরীক্ষার্থীর বিপরীতে পাঁচ থেকে ছয় হাজার জনকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। ১০০টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন থাকে। ইংরেজিতে ২৫, বাংলায় ২৫, গণিতে ২০, সাধারণ জ্ঞানে ২০ এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে ১০ নম্বর। পরীক্ষার সময় ৬০ মিনিট। প্রতি প্রশ্নের বিপরীতে সময় ৩৬ সেকেন্ড। এ নিয়োগে পদসংখ্যা সমন্বিত ব্যাংকের তুলনায় কম হওয়ায় প্রিলিমিনারির কাটমার্ক তুলনামূলক বেশি হয়। তাই প্রতিটি বিষয়েই ভালো নম্বর পাওয়া জরুরি।
বাংলা
বাংলা অংশের ২৫ নম্বরে ব্যাকরণ থেকে প্রশ্ন আসে গড়ে ১৭টি। বাংলা বোর্ডের বইটি শেষ করে বাজারের যে কোনো বই থেকে বিগত প্রশ্ন অনুশীলন করা যেতে পারে। ভাষা ও ব্যাকরণ, ধ্বনি ও বর্ণ, সন্ধি, বানান ও অপপ্রয়োগ, সমাস, শব্দের শ্রেণিবিভাগ ও উৎস, বচন, দ্বিরুক্ত, সংখ্যাবাচক, লিঙ্গবাচক শব্দ, উপসর্গ, প্রকৃতি ও প্রত্যয়, বিপরীত শব্দ, শব্দার্থ ও সমার্থক শব্দ, পদ প্রকরণ, কারক বিভক্তি, বাক্য প্রকরণ, বাচ্য ও উক্তি, বাগধারা ও প্রবাদ, এক কথায় প্রকাশ অংশে গুরুত্ব দিতে হবে। বাকি আটটি প্রশ্ন সাহিত্য অংশ থেকে আসে। বিসিএসের মতো খুব বেশি গভীর থেকে প্রশ্ন আসে না বলে বিসিএসের যে কোনো ডাইজেস্ট ও বিগত প্রশ্ন পড়লেই সিংহভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে যায়।
ইংরেজি
ইংরেজি অংশের ২৫ নম্বরে সাহিত্য থেকে প্রশ্ন আসে না বললেই চলে। প্রায় ১৫টি প্রশ্ন আসে Synonym, Antonym, Meaning, One word Sub, Spelling, Analogy, Odd man out, Idioms & Phrases থেকে। এ জন্য ভোকাবুলারি জ্ঞান বৃদ্ধি ও চর্চার বিকল্প নেই। প্রতিদিন ১০ থেকে ২০টি শব্দ টার্গেট করে পড়ে সপ্তাহান্তে একবার রিভাইস দেওয়া উচিত। গ্রামার অংশের জন্য Preposition, Sentence Correcction, Pin point Error, Sentence Transformation, Part of speech-এ বেশি জোর দিতে হবে। টোফেলের গ্রামার বইটি থেকে মিনি টেস্টগুলো সমাধান করলে ভালো ফল পেতে পারেন। এ ছাড়া ইংরেজি পত্রিকা পড়লে ভালো ফল পাওয়া যায়।
গণিত
পূর্বের সিলেবাসে ৮০টি প্রশ্নের মধ্যে প্রায় ৩০টি প্রশ্নই গণিত থেকে হতো। নতুন সিলেবাসে বিএসসি ১০০টি প্রশ্ন থেকে ২০টি প্রশ্ন করে গণিত অংশ থেকে। গণিতের সব প্রশ্নই ইংরেজিতে হওয়ায় NCTB-এর ওয়েবসাইট থেকে ইংরেজি ভার্সনের বোর্ড বইগুলো থেকে প্রাথমিক ধারণা নেওয়া যেতে পারে। তারপর বাজারের আইবিএ প্রস্তুতির গণিত বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে অনুশীলন প্রয়োজন। Number System, HCF & LCM, Ratio and proportion, Average, Percentage & Profit Loss, Simple, compound Interest, Algebric Functions, Equation & Inequalities, Logarithm & Indices, Permutation & Combination, Probability, Set Theory, Geometry অধ্যায়গুলোতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
সাধারণ জ্ঞান
সাধারণ জ্ঞান অংশের ২০ নম্বরের প্রস্তুতির জন্য সাম্প্রতিক তথ্যগুলো জানা জরুরি। নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়লে এ অংশের পাশাপাশি লিখিত অংশের জন্যও ভালো প্রস্তুতি হবে। এ ছাড়া জাতীয় বিষয়াবলি, অর্জন, পদক, সমীক্ষা, উচ্চতম, দীর্ঘতম, বৃহত্তম, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, বিখ্যাত চলচ্চিত্র, খেলাধুলা, বৈজ্ঞানিক পরিমাপক যন্ত্রাদি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। বিসিএসের সাধারণ জ্ঞান বইগুলোর তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সাধারণ জ্ঞান বই অধিক সহায়ক হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি
তথ্যপ্রযুক্তি অংশের ১০ নম্বরের জন্য মাইক্রোসফট অফিস, সংক্ষিপ্ত নামের পূর্ণরূপ, বাংলাদেশের ফিনটেক, পেমেন্ট সিস্টেম, নেটওয়ার্ক, ভাইরাস ও সিকিউরিটি, ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট এবং ইনপুট আউটপুট ডিভাইস, হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সম্পর্কে জানতে হবে। প্রস্তুতির জন্য যে কোনো বিসিএস ডাইজেস্টের কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি অংশটুকু ভালো পড়তে পারেন।
সর্বোপরি ভালো প্রস্তুতিই শেষ কথা নয়, ভালো পরীক্ষার্থী হওয়াও জরুরি। তাই নিয়মিত মডেল টেস্ট দিয়ে নিজেকে যাচাই ও কৌশল নির্ধারণ করা উচিত। ব্যাক ক্যালকুলেশন, এডুকেটেড গেস কিংবা মেথড অব ডিডাকশনের কৌশল আপনাকে এনে দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম
মন্তব্য করুন