মাত্র ৭ লাখ টাকা পরিশোধের সামর্থ্য নেই ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতাধীন ডাক অধিদপ্তরের। এ বকেয়া টাকার জন্য রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ডাক অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ডাক ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)। গতকাল বুধবার সকালের দিকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ফলে পুরো দিন তীব্র গরম ও অন্ধকারে কাটিয়েছেন অধিদপ্তরের ২৫০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। শুধু তা-ই নয়, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে বকেয়া বিলের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের আতঙ্কে রয়েছেন মতিঝিল পোস্টাল কলোনির ৬২৮ পরিবার।
বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ২০২২ সালের ১ জুন শেরেবাংলা নগরে একনেক সভায় নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলী কালবেলাকে বলেন, আমরা বকেয়া পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছি; কিন্তু তারা কেউ সাড়া দেয়নি। বকেয়া পরিশোধের নির্দিষ্ট তারিখ জানালেই আমরা ফের সংযোগ চালু করে দেব। কিন্তু তারা নির্দিষ্ট তারিখ দিতে পারছেন না। ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হারুনুর রশীদও বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, মাত্র ৭ লাখ টাকা পরিশোধের সক্ষমতা নেই ডাক অধিদপ্তরের। ফলে ডেসকো বকেয়া বিলের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। আমরা অসহ্য গরম ও অন্ধকারের মধ্যে অফিস করছি। দুই মাসে ৭ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে বলেও জানান তিনি। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, মতিঝিল পোস্টাল কলোনিতে ৬২৮টি পরিবারের বসবাস। ওই কলোনিতেও বিদ্যুৎ বিলের আড়াই কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে ডাক অধিদপ্তর। যে কোনো সময় সেখানেও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবে ঢাকা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। ফলে কলোনির বাসিন্দারা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। মতিঝিল পোস্টাল কলোনিতে ডাক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসবাস করছেন।
কলোনির প্রকল্প পরিচালক আনজীর আহমেদ কালবেলাকে বলেন, অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ আমরা কাজ করছি। এ বিষয়ে মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। দ্রুতই ডেসকো ও ডিপিডিসিকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিক রাখার চেষ্টা চলছে।
কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালের শেষ দিকে প্রায় পৌনে ১ একর জমির ওপর কাজ শুরু হয় ডাক ভবনের। প্রথমে আটতলা নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা দাঁড়ায় ১৪ তলায়। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হয়েছে পুরো অর্থ। ২০২১ সালের মে মাসে ডাকবক্সের আদলে তৈরি ডাক ভবন চালু হয়।
মন্তব্য করুন